ইরানের চীনা তেল আমদানিকারকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

ইরানের তেল রপ্তানিকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে একটি চীনা ‘টিপট’ তেল পরিশোধনাগারও রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তেহরানের উপর চাপ বাড়াতে আবারও তার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি চালু করেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানায়, এই পদক্ষেপ চীনা আমদানিকারকদের উপর চাপ বাড়াবে, যাতে ইরানের তেল রপ্তানি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা বাস্তবায়ন করা যায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

এই পদক্ষেপটি এমন এক সময় এসেছে যখন ট্রাম্প প্রশাসন এই মাসে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করেছে। গত সপ্তাহে ওমানে এক দফা আলোচনা হয়েছে। এই সপ্তাহের শেষে রোমে দ্বিতীয় দফা আলোচনার কথা রয়েছে।

ট্রেজারি বিভাগ জানায়, বুধবার একটি চীনা-ভিত্তিক স্বাধীন টিপট তেল শোধনাগারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটি এক বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি অপরিশোধিত তেল কেনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা দ্বিতীয় চীনা স্বাধীন তেল পরিশোধনাগার।

ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘যে কোনও তেল শোধনাগার, কোম্পানি বা দালাল যারা ইরানি তেল কিনবে বা তাদের তেল বাণিজ্যে সহায়তা করবে, তারা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল সরবরাহ চেইনকে সমর্থন দেওয়া সকল পক্ষকে লক্ষ্য করে তা ধ্বংস করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ এই তেলের আয় ইরান তাদের সন্ত্রাসী সহযোগী ও মিত্রদের সহায়তায় ব্যবহার করে।’

চীনের এসব টিপট তেল শোধনাগারকে অতীতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়নি। কারণ তাদের মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ নেই। উল্লেখ্য চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে ইরানি তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে।

ওয়াশিংটন আরও কয়েকটি কোম্পানি ও জাহাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এগুলো চীনে ইরানি তেল পরিবহনে সহায়তা করছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে অনতিবিলম্বে চীনা সংস্থা ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে। চীন তার আইনসম্মত অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

নিউ ইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘে ইরানের মিশন এবং ওয়াশিংটনের চীনা দূতাবাস এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।

চীন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মানে না এবং বর্তমানে ইরানি তেলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক। চীন ও ইরান একটি বাণিজ্যিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যেখানে মূলত চীনা ইউয়ান এবং মধ্যস্থতাকারী ব্যবস্থার মাধ্যমে লেনদেন হয়। ফলে ডলার বা মার্কিন নিয়ন্ত্রকের নজর এড়ানো যায়।

ট্রেজারি বিভাগ বুধবার ইরানি তেল নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ব্যবহৃত কৌশল শনাক্ত করতে এবং সেগুলি প্রতিরোধে জাহাজ ও সামুদ্রিক খাতের অংশগ্রহণকারীদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে।