পারমাণবিক ইস্যুতে ইরানের নেতাকে ট্রাম্পের চিঠি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি করতে চান। এজন্য বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ)দেশটির নেতৃত্বের কাছে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।শুক্রবার ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি বলেছি, আমি আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ এটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, তিনি এই বিষয়ে খুব শিগগিরই অগ্রগতি আশা করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের সাথে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছি। এটা হবে এক আকর্ষণীয় সময়। দেখা যাক কী হয়। তবে আমরা চূড়ান্ত মুহূর্তে রয়েছি। তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পেতে দেওয়া যাবে না।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমাদের ইরানকে নিয়ে এমন এক পরিস্থিতি আছে যেখানে খুব শিগগিরই কিছু একটা ঘটবে... আশা করি আমরা একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে পারব। আমি শক্তি বা দুর্বলতার অবস্থান থেকে বলছি না। আমি শুধু বলছি, আমি যুদ্ধের চেয়ে শান্তি দেখতে চাই। তবে অন্য উপায়েও সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

ফক্স বিজনেসকে ট্রাম্প বলেন, 'ইরানকে দুটি উপায়ে সামলানো যেতে পারে: সামরিকভাবে, অথবা চুক্তির মাধ্যমে। আমি চুক্তি করতে চাই, কারণ আমি ইরানের ক্ষতি করতে চাই না। তারা চমৎকার মানুষ।’

ট্রাম্পের চিঠিটি মূলত ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উদ্দেশে লেখা।

ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত নূর নিউজ ট্রাম্পের চিঠিকে ওয়াশিংটনের ‘পুনরাবৃত্তি করা নাটক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ ইরান ইসরায়েল, উপসাগরীয় তেল উৎপাদক দেশগুলোকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে এবং আঞ্চলিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়াতে পারে।

তবে ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে।

ট্রাম্প হয়তো একটি কূটনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করতে চাইছেন। কারণ মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, ইরান এখন দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো, যেমন: গাজায় হামাস যোদ্ধা এবং লেবাননে হিজবুল্লাহ- ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা গুরুতরভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আর তেহরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন।

তবে ইরানি কর্মকর্তারা তাদের আঞ্চলিক প্রভাব কমে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। গত বছর ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বিভিন্ন স্থাপনা, যেমন: ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়। তাই মার্কিন কর্মকর্তারা এবং বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের প্রচলিত সামরিক সক্ষমতা এখন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।