যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে নির্ধারিত সময়সীমা রবিবারের মধ্যে লেবাননের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না ইসরায়েল। দুই মাস আগে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের পর যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছিল। চুক্তির শর্তানুযায়ী এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
২৭ নভেম্বর কার্যকর হওয়া এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, লেবাননের সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে মিলে দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন হতে হবে।
এদিকে, ইসরায়েলের সেনারা ধাপে ধাপে ৬০ দিনের মধ্যে এই অঞ্চল ছাড়বে বলে চুক্তি হয়েছিল। তবে, শনিবার লেবাননের সেনাবাহিনী বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর গড়িমসির কারণে এই চুক্তি কার্যকর হতে দেরি হচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সরে গেলেও পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় এখনও অবস্থান করছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় শুক্রবার বলেছে, লেবাননের সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখনও পুরোপুরি কার্যকর করতে পারেনি। ফলে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা রবিবারের পরেও বাড়তে পারে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সেনা প্রত্যাহার লেবাননের সেনাবাহিনীর মোতায়েন ও হিজবুল্লাহর লিতানি নদীর উত্তরে সরে যাওয়ার ওপর নির্ভর করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে ধাপে ধাপে চলবে।
লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলের সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করলেই তারা দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন হতে প্রস্তুত।
হিজবুল্লাহর সংসদ সদস্য আলি ফায়াদ শনিবার বলেছেন, ইসরায়েল সীমান্ত এলাকাগুলোতে ধ্বংসাত্মক নীতি অনুসরণ করছে। এর ফলে, সেখান থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া বাসিন্দাদের পুনর্বাসন অসম্ভব হয়ে উঠছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন শনিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলার জন্য ইসরায়েলকে বাধ্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে দক্ষিণ লেবাননের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।
আউন আরও বলেন, ইসরায়েলকে সীমান্ত গ্রামগুলো ধ্বংস করা এবং লেবাননের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে।
ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সব পক্ষকে শর্তগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
নভেম্বরের এই চুক্তি দুই মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায়। এর আগে, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হলে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্তে গোলাবর্ষণ শুরু করে। ইসরায়েল তখন হিজবুল্লাহর ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়, যেখানে সংগঠনটির শীর্ষ নেতাসহ বহু সদস্য নিহত হন।
হিজবুল্লাহ বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ৬০ দিনের সময়সীমা লঙ্ঘন হলে সেটি চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। তবে তারা ইসরায়েলের ওপর হামলার হুমকি না দিয়ে বলেছে, লেবাননের সরকারকে সবধরনের উপায় ব্যবহার করে ভূমি পুনরুদ্ধার করতে হবে।