‘যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত’ ইরান: ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত বলে দাবি করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। রবিবার (১৩ অক্টোবর) ইরাক সফরের সময় এ কথা বলেন তিনি। তবে এসময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ইরানের সরকার শান্তি চায়। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এই খবর জানিয়েছে।

ইরাকের রাজধানী বাগদাদ সফরকালে আব্বাস আরাগচি বলেছিলেন, ‘আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। আমরা যুদ্ধকে ভয় পাই না। তবে আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই শান্তি এবং আমরা গাজা ও লেবাননে ন্যায়সঙ্গত শান্তির জন্য কাজ করবো।’

এর আগে, ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রত্যাশিত প্রতিশোধমূলক হামলার আগে, ইরানের জনগণ ও এর স্বার্থ রক্ষায় ‘কোনও রেডলাইন’ বিবেচনায় নেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা একটি পোস্টে আরাগচি লিখেছিলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যদিও আমরা এই অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা রুখে দিতে ব্যাপক চেষ্টা করেছি, তবে এখন আমি স্পষ্টভাবে বলছি, আমাদের জনগণ ও স্বার্থরক্ষায় আমরা কোনও রেডলাইন মানবো না।’

১ অক্টোবর ইসরায়েলে ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল ইরান। দেশটির মাটিতে তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতাদের হত্যা এবং ইরানের বিপ্লবী গার্ডের এক জেনারেলকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা করেছে ইরান।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট হুমকি দিয়েছেন, এই হামলার ‘ভয়াবহ, সুনির্দিষ্ট ও অভাবনীয়’ জবাব দেওয়া হবে।

ইরানের মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা ও লেবাননের যুদ্ধ নিয়ে ইরাকি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আরাগচি বাগদাদে গিয়েছিলেন।

ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আলি আল মুসাভি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আরাগচির এই সফর ‘অস্ত্র ও সহিংসতা বন্ধ করার জন্য… অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায়’ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটি অংশ।

ইরানি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ জানিয়েছে, বাগদাদের পর ওমানে যাবেন আরাগচি। বৃহস্পতিবার কাতারে ছিলেন তিনি। সেখানে গাজা ও লেবাননের যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

গাজা যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনার মধ্যস্থতা করছে কাতার। দেশটি লেবাননে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

একদিন আগে, আরাগচি সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে আরাগচি বলেছিলেন, ইরান ‘যুদ্ধ চায় না’। তবে ইরান যুদ্ধে ‘ভয়ও পায় না।’

আল-জাজিরাকে তিনি বলেছেন, ‘আমরা যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকবো।’