ইসরায়েল কি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে?

ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছে। ইসরায়েল অবশ্য বলেছে, তারা এই অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধ চায় না। তবে রবিবারের (২৫ আগস্ট) এই হামলা তারাই আগে শুরু করেছে। আর এর পেছনে অদ্ভুত অজুহাতও দিয়েছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে-এমন তথ্য পেয়ে তারা আগেভাগেই হামলা চালিয়েছে। এখন কি হতে যাচ্ছে? ইসরায়েল কি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে? কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

রবিবার ভোরে দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপরই ইসরায়েলের ১১টি সামরিক ঘাঁটি ও ব্যারাক লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।

ইসরায়েল দাবি করেছে, তার বাহিনী এসব রকেটের বেশিরভাগই ধ্বংস ও লক্ষ্যভ্রষ্ট করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের এমন দাবি নাকচ করে দিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, তাদের আক্রমণাত্মক ড্রোনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে চালু করা হয়েছিল এবং সেগুলো সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিড হামলার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেছেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আক্রমণ আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ। বিশ্বের উচিত ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দেওয়া।

অবশ্য ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ বলেছেন, তারা এই অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধ চায় না। ইরানের নেতৃত্বে অশুভ শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা শত্রুপক্ষের কাছ থেকে তারা তাদের নাগরিক ও ভূখণ্ড রক্ষার কাজ করছেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

পাল্টাপাল্টি হামলার পর বৈরুতে জর্ডানের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।  ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে তা খুলে দেওয়া হয়।

হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে তাদের কমান্ডার ফুয়াদ শুকর হত্যার বদলা নিতে হামলার প্রথম পর্যায় সম্পন্ন হয়েছে।

এতে পরিস্থিতি এখনকার মতো শান্ত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লেভান্ট ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সামি নাদেরের মতে, ‘পুরো অঞ্চলকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে টেনে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ কিন্তু হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল তা ‘এড়াতে চেষ্টা করছে।’

এরপর কি হবে? জানতে চাইলে আল জাজিরাকে সামি নাদের বলেন, ‘এটা এখনও স্পষ্ট নয়।’

গাজায় যুদ্ধের প্রায় এক বছর হতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ইসরায়েল কি আরেকটি যুদ্ধের জন্য উদগ্রীব?

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ নেতারা বলছেন, তারা আর একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চান না। তবে উভয় পক্ষই এর জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।