রাফাহ শহরের আরও ভেতরে ঢুকেছে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের আরও ভেতরে ঢুকেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ড্রোন, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান এবং ট্যাংক থেকে বুধবার (২২ মে) রাতে সেখানে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে সেনারা। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের পুনরায় সংগঠিত হওয়া রোধ করতে চলতি মাসে শহরটিতে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে। 

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরটিতে কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে সেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আবারও নতুন করে হামলা শুরু করায় রাফাহ ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এমনকি গাজায় ত্রাণ প্রবেশের প্রধান প্রবেশদ্বারগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে সেনারা। সেখানে ব্যাপক প্রাণহানি ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইসরায়েল বলেছে, তারা বিশ্বাস করে, রাফাহতে হামাস যোদ্ধাদের শেষ ব্যাটালিয়নটি আশ্রয় নিচ্ছে। তাই সেখানে হামলা চালানো ছাড়া তাদের আর কোনও বিকল্প নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সশস্ত্র যোদ্ধারা বলেছেন, রাফাহতে একটি নতুন অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো। আগের বারের তুলনায় সেগুলো এবার শহরটির আরও পশ্চিমে মিসরের সঙ্গে গাজার দক্ষিণ সীমান্তের কাছে ইবনা এলাকায় অবস্থান করছে। তবে পাল্টাপাল্টি লড়াইয়ের কারণে এখনও রাফাহ প্রাণকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেনি সেনারা।

হামাসের সশস্ত্র শাখা বলেছে, মিসরের সীমান্তবর্তী বেড়া বরাবর একটি গেটে ট্যাংকবিধ্বংসী রকেট দিয়ে ইসরায়েলের দুটি সাঁজোয়া যানে আঘাতে করেছে তারা।

ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ড্রোন ব্যবহার করে ইবনা শহরতলিতে গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা একটি চ্যাট অ্যাপে রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ড্রোন, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান এবং ট্যাংক থেকে রাতভর গোলাগুলি চলেছে।’

রাফাহ শহরের হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া পায়নি রয়টার্স।

এর আগে, গতকাল একটি ব্রিফিংয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছিল, ইসরায়েলি সেনারা গাজা উপত্যকা জুড়ে ‘প্রায় ৭০টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু’কে ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে সামরিক স্থাপনা, অস্ত্রের গুদাম, ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার এবং পর্যবেক্ষণ পোস্ট ছিল। অভিযানে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবিও করেছিল তারা।

৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। তখন আরও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান সশস্ত্র যোদ্ধারা। এর প্রতিক্রিয়ায় ওইদিনই অঞ্চলটিতে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এসময় আরও ১০ হাজার মানুষ নিখোঁজ ও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।