গাজা ছাড়তে ইসরায়েলি নির্দেশ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে: জাতিসংঘ

গাজা অবরোধ ও গাজার বেসামরিক মানুষদের উত্তর থেকে দক্ষিণে চলে যাওয়ার ইসরায়েলি নির্দেশ জোরপূর্বক স্থানান্তর ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র এই মন্তব্য করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

গাজার উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে কয়েক লাখ মানুষ সেখানে চলে গেছেন। মঙ্গলবার ইসরায়েল জানিয়েছে, এখনও গাজার উত্তরে ১ লাখ বাসিন্দা রয়ে গেছেন। দেশটি দাবি করে আসছে, বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা কম রাখতেই তারা এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলেও বিমান  হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।  

জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেছেন, মনে হচ্ছে গাজা থেকে সাময়িক উচ্ছেদ হওয়া বেসামরিকদের উপযুক্ত বাসস্থান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করার বিষয়ে ইসরায়েল কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।

তিনি বলেছেন, আমরা উদ্বিগ্ন গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার জন্য এই ইসরায়েলি নির্দেশকে আইন সম্মত সাময়িক উচ্ছেদ হয়ত বলা যাবে না। ফলে এটি জোরপূর্বক বেসামরিকদের স্থানান্তরের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হতে পারে।

তিনি আরও বলেছেন, যারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে বাড়ি ছেড়েছেন তারা এখন গাজার দক্ষিণে আটকা পড়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা কম, দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে খাবার, সুপেয় পানির সরবরাহ খুব কম বা একেবারে নেই, ওষুধ এবং মৌলিক প্রয়োজনীয়তা মেটাতে পারছেন না।

‘জোরপূর্বক স্থানান্তর’ হলো শক্তি প্রয়োগ করে বেসামরিকদের অন্যত্র স্থানান্তর করা। এটি একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) এই অপরাধ শাস্তিযোগ্য।

পৃথক মন্তব্যে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, গাজায় তাদের খাদ্যের সরবরাহ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তবে মিসরের আল-আরিশ শহরে খাদ্য মজুত করা হচ্ছে।

সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রধান আবির এতেফা বলেছেন, তাদের আশা দ্রুত সীমান্ত দিয়ে ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে।

খাদ্য ও পানির সরবরাহের ঘাটতির পাশাপাশি গাজার স্বাস্থ্য খাতও বিপর্যয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়ার তালেং মফোকেং।