জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর, পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার স্থগিত করেছে ভারত। এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস) ভারতের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণে বৈঠক করে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক একাধিক কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
ওই বৈঠকে নয়াদিল্লি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদে সহায়তা ও আশ্রয়দানের অভিযোগ এনেছে এবং এর জবাবে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে কয়েক দশক পুরোনো সিন্ধু নদীর পানি চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানের সিনিয়র কূটনৈতিক কর্মীদের বহিষ্কার ও উভয় দেশের কূটনৈতিক মিশনের কর্মী সংখ্যা হ্রাস। ভারত ও পাকিস্তানের হাই কমিশনগুলোতে কর্মী সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ আনা হবে এবং এটি ১ মে’র মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
ভারত দিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান হাই কমিশন থেকে সকল প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাকে বহিষ্কার করেছে। তাঁদেরকে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ভারত ইসলামাবাদে তাদের নিজস্ব হাই কমিশন থেকেও সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করবে। উভয় মিশনে এসব উপদেষ্টাদের সাথে যুক্ত পাঁচজন সহকারী কর্মীকেও প্রত্যাহার করা হবে।
ভারত আরও ঘোষণা করেছে যে, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সার্ক ভিসা ছাড় স্কিম স্থগিত করা হয়েছে। এই প্রোগ্রামের আওতায় পূর্বে ইস্যু করা সব ভিসা অবিলম্বে বাতিল করা হয়েছে।
ভারতের পক্ষে পাকিস্তানের সঙ্গে একমাত্র কার্যকর স্থল সীমান্ত পারাপার পয়েন্ট হলো অটারি ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট। ওই পোস্ট তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। বৈধ নথিপত্র নিয়ে এই চেক পোস্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করা পাকিস্তানি নাগরিকরা ১ মে’র নির্ধারিত সময়সীমার আগে দেশে ফিরে যেতে পারবেন বলে মিস্রি জানিয়েছেন।
এই কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া আসে পহেলগাঁওয়ে ২৩ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার পরদিন যেখানে ২৫ জন ভারতীয় নাগরিক ও একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন।
দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।