মমতার অভিযোগ নিয়ে দিল্লির প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের সঙ্গে পানি বণ্টনের আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গকে উপেক্ষা করা হয়নি

২০২৬ সালের পর বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়নের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের জবাবে নয়া দিল্লি নতুন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল শুক্রবার (২৮ জুন) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই চুক্তি নবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়। এই চুক্তি নবায়নের জন্য গঠিত কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি ছিলেন এবং কমিটির বৈঠকেও তিনি অংশ নিয়েছেন।

মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট অভ্যন্তরীণ একটি কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের প্রতিনিধি মনোনীত করেছিল। এই কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

২০-২১ জুন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি পাঠিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও পানি সম্পর্কিত আলোচনার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই প্রধানমন্ত্রী তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ২০২৬ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে যাওয়া ফারাক্কা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে একমত হয়েছিলেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার চিঠিতে লিখেছিলেন, রাজ্য সরকারের পরামর্শ ও মতামত ছাড়া এমন একতরফা আলোচনা ও আলাপ-আলোচনা গ্রহণযোগ্য নয়, অনাকাঙ্ক্ষিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, অভ্যন্তরীণ কমিটি এ পর্যন্ত চারটি বৈঠক করেছে: ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট ও ৩০ অক্টোবর এবং চলতি বছরের ১৫ মার্চ ও ৩১ মে। এই কমিটি ১৪ জুন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যা বর্তমানে পানি শক্তি মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সেখানকার সেচ ও জলপথ বিভাগের যুগ্ম সচিব অথবা প্রধান প্রকৌশলী (ডিজাইন ও গবেষণা)। তারা চারটি বৈঠকের মধ্যে তিনটিতে অংশগ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ মনোনীত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত তিনটি বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, ২০২৪ সালের ৫ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে শিল্প ও পানীয় জলের চাহিদার কথা নবায়নকৃত চুক্তিতে অন্তর্ভুক্তির কথা জানানো হয়েছিল। এই প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি ২০২৪ সালে ৩১ অনুষ্ঠিত কমিটির সর্বশেষ বৈঠকেও পুনরায় তুলে ধরেছিলেন।

মুখপাত্র জানান, এর ভিত্তিতে পানি শক্তি মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারসহ অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ করে চুক্তি নবায়নের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সম্পন্ন করেছে। পরের ধাপে পানি শক্তি মন্ত্রণালয় গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা শুরু করার জন্য একটি যৌথ প্রযুক্তিগত কমিটি গঠন করেছে।