ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার ইঙ্গিত পুতিনের

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেছেন, যেকোনও শান্তি উদ্যোগের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে তার এবং আশা করেন কিয়েভও একই অনুভূতি প্রকাশ করবে।  

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকেই মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে কোনও দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আসার জন্য চাপ দিচ্ছে। 

৩০ ঘণ্টার ইস্টার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুতিনের এই মন্তব্যকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সরাসরি আলোচনার ইচ্ছা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। রাশিয়ার ইন্টারফ্যাক্স বার্তা সংস্থা পেসকভকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট যখন বেসামরিক লক্ষ্যগুলোতে আঘাত না করার বিষয়টি আলোচনার কথা বলেছেন, তখন তার উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা।  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের প্রস্তাবের সরাসরি উত্তর না দিলেও সোমবার রাতে ভিডিও বার্তায় জানান, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইউক্রেন যেকোনও আলোচনার জন্য প্রস্তুত। রবিবার জেলেনস্কি দীর্ঘমেয়াদি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধে অন্তত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। 

পুতিন বলেন, রাশিয়া এই প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তিনি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রেস্তোরাঁ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসামরিক স্থাপনাকে সামরিক কাজে ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন। জেলেনস্কি পুতিনের উদ্দেশে জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেন তার প্রস্তাবে অটল এবং মস্কোর কাছ থেকে একটি স্পষ্ট উত্তর আশা করছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দেওয়ার পর এই আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, শিগগিরই একটি সমঝোতা হতে পারে। 

জেলেনস্কি জানান, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের প্রতিনিধিরা বুধবার লন্ডনে বৈঠক করবেন। গত সপ্তাহে প্যারিসে অনুরূপ একটি বৈঠক হয়েছিল। 

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো বলেছেন, প্যারিস বৈঠকে ইউক্রেন সংক্রান্ত বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউরোপের রেড লাইন তুলে ধরা হয়েছে। পুতিনের ইস্টার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ছিল একটি মার্কেটিং অপারেশন। যা ট্রাম্পের চাপ কমানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। 

যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চললেও রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে তার সামরিক সুবিধাকে কাজে লাগাতে তৎপর। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ৫৪টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এদিকে, রুশ সেনারা কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের শেষ ঘাঁটি গোর্নাল সেন্ট নিকোলাস বেলগোরস্কি মঠ দখল করেছে বলে রুশ সংবাদমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা