প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চায় ইউক্রেন, চাপ বাড়াচ্ছে রাশিয়া

রাশিয়া একযোগে যুদ্ধক্ষেত্র, আকাশ ও কূটনৈতিক অঙ্গনে ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে। এমন এক সময়েই প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার অনুমতি দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি অনুরোধ করেছে ইউক্রেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) কিয়েভ, লভিভ এবং অন্যান্য শহরে রাশিয়া ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা ঠেকাতেই প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের মতো আরও আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ এক চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনতে আগ্রহী—এমনকি নিজেদের অর্থায়নেই। এর মাধ্যমে ইউক্রেন আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনের মাধ্যমে তারা আরও কার্যকর প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারবে।

চিঠিতে উমেরভ বলেন, আমরা কেবল সাহায্য চাইছি না, আমরা প্যাট্রিয়ট সিস্টেম কিনতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, এই সিস্টেমগুলো সরবরাহ করা ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষায় বড় পরিবর্তন আনবে।

রাশিয়া বর্তমানে পূর্ব ইউক্রেনে নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে এবং একইসঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলেও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। রুশ সেনারা খারকিভ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি সীমান্তবর্তী গ্রামে প্রবেশ করেছে, যা চলমান যুদ্ধে একটি নতুন মোড় নির্দেশ করছে।

ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা খারকিভের উত্তরে রাশিয়ার অগ্রগতি ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তবে রুশ বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে একযোগে চাপ সৃষ্টি করছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের সেনারা ‘কঠিন ও উত্তেজনাপূর্ণ’ পরিস্থিতির মধ্যে লড়াই করছে। আকাশপথেও রাশিয়ার হামলা বেড়েছে।

বর্তমানে ইউক্রেনের হাতে সীমিতসংখ্যক প্যাট্রিয়ট ইউনিট রয়েছে, যার বেশিরভাগই পশ্চিমা দেশগুলোর অনুদানের মাধ্যমে এসেছে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ইউক্রেনের সহায়তা প্যাকেজ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার ফলে নতুন সরবরাহে বিলম্ব হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সরাসরি প্যাট্রিয়ট কেনার প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে সময়ক্ষেপণ না হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের এই পদক্ষেপ যুদ্ধ পরিস্থিতির গুরুতরতা ও তাদের আকাশ প্রতিরক্ষার ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। আর রাশিয়ার পক্ষ থেকে সবদিক দিয়ে চাপ বাড়ানো-বিমান, স্থল ও রাজনৈতিক-এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা খারকিভ অঞ্চলে ‘কৌশলগত অগ্রগতি’ অর্জন করেছে এবং সেখানে তাদের অভিযানে সাফল্য পাচ্ছে বলে দাবি করেছে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন এই অঞ্চলের দিকে-ইউক্রেনের প্যাট্রিয়ট কেনার অনুমোদন মিলবে কি না এবং রাশিয়ার এই নতুন ধাক্কা কতটা প্রতিহত করা সম্ভব তা নির্ধারণ করবে পরবর্তী যুদ্ধের গতি।