নারীর ‘জৈবিক’ সংজ্ঞাকে সমর্থন জানালো ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট

ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে বলেছে, সমতা আইনে নারী বলতে জৈবিক নারীকেই বোঝায়। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দেওয়া এ রায়ে স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে লিঙ্গভিত্তিক অধিকারের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। 

পাঁচ জন বিচারকের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে রায় দেন যে, ২০১০ সালের সমতা আইনে ‘নারী’ ও ‘লিঙ্গ’ শব্দের অর্থ জৈবিক নারী ও জৈবিক লিঙ্গ। বিচারপতি লর্ড হজ বলেছেন, এ রায়কে এক পক্ষের জয় হিসেবে দেখা উচিত নয়। ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বৈষম্য রোধে আইনি সুরক্ষা এখনও বলবৎ রয়েছে। 

২০১৮ সালে স্কটল্যান্ডের সরকার সরকারি খাতে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে একটি বিল পাস করে। কিন্তু ফর উইমেন স্কটল্যান্ড নামের সংগঠন অভিযোগ করে, এ বিলে ট্রান্সজেন্ডার নারীদেরও নারীর কোটা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, যা আইনত ভুল। এরপর থেকে এ নিয়ে আদালতে লড়াই চলছিল। 

স্কটিশ সরকারের পক্ষে বলা হয়েছিল, জেন্ডার রিকগনিশন সার্টিফিকেট (জিআরসি) প্রাপ্ত ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরাও জৈবিক নারীদের মতো একই সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সে যুক্তি নাকচ করে দিয়েছে। 

ফর উইমেন স্কটল্যান্ড-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা সুজান স্মিথ বলেন, আজ আদালত আমাদের বিশ্বাসকেই সমর্থন দিয়েছে। নারীরা তাদের জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতেই সুরক্ষিত। 

অন্যদিকে, ট্রান্স অধিকারকর্মী ও স্কটিশ গ্রিন দলের এমএসপি ম্যাগি চ্যাপম্যান এ রায়কে ‘মানবাধিকারের জন্য উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেন। তার মতে, এটি ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা হ্রাস করতে পারে। 

আদালত বলেছে, জৈবিক লিঙ্গের সংজ্ঞা না মানলে হাসপাতালের ওয়ার্ড, জেল, আশ্রয়কেন্দ্র বা নারীদের জন্য সংরক্ষিত স্থানের কার্যকারিতা হারাবে। এছাড়া, লেসবিয়ানদের জন্য সংরক্ষিত স্থানও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। 

যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, এ রায় নারী ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বচ্ছতা এনেছে। একলিঙ্গ স্থান আইন দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে। 

স্কটিশ সরকার এখনও রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।