ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা সমন্বয়ের দায়িত্ব নিলো ন্যাটো

ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমাদের সামরিক সহায়তার সমন্বয়ের দায়িত্ব নিয়েছে ন্যাটো। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) একটি সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে এই দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত হলেও এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো ন্যাটো-বিরোধী মনোভাবাপন্ন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রভাব থেকে সহায়তা ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখা।

এই পদক্ষেপের ফলে ন্যাটো রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যুদ্ধে আরও সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে এতে জোটের নিজস্ব বাহিনী সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

কূটনীতিকদের মতে, দায়িত্ব হস্তান্তর সত্ত্বেও ইউক্রেনের ওপর এর প্রভাব সীমিত হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রই ন্যাটোর প্রধান শক্তি এবং কিয়েভের জন্য সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সহায়তা কমিয়ে দিলে ইউক্রেনের জন্য এটি বড় ধাক্কা হতে পারে।

আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ট্রাম্প ইতোমধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে দ্রুত সমাধানের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তবে কীভাবে তা করবেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন আর্থিক ও সামরিক সহায়তার সমালোচনা করে আসছেন।

ন্যাটোর নতুন ইউক্রেন মিশন, যা ন্যাটো সিকিউরিটি অ্যাসিসট্যান্স অ্যান্ড ট্রেনিং ফর ইউক্রেন নামে পরিচিত, জার্মানির উইসবাডেনে অবস্থিত ক্লে ব্যারাকে স্থাপন করা হয়েছে। সূত্র জানায়, এটি এখন সম্পূর্ণরূপে কার্যকর। তবে বিলম্বের কোনও আনুষ্ঠানিক কারণ জানানো হয়নি।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ৫০টি দেশের সাময়িক জোট রামস্টাইন গ্রুপ কিয়েভে সামরিক সহায়তা সরবরাহের সমন্বয় করত।

এদিকে, ওয়াশিংটনের বিদায়ী প্রশাসন ইউক্রেনে যত বেশি সম্ভব অস্ত্র পাঠানোর জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। কারণ আশঙ্কা রয়েছে যে, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সামরিক সরঞ্জামের সরবরাহ কমিয়ে দিতে পারেন।

প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ট্রাম্প ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছিলেন এবং সদস্য দেশগুলোকে সামরিক খাতে তাদের জিডিপির ৩ শতাংশ ব্যয়ের দাবি করেছিলেন। এটি ন্যাটোর নির্ধারিত ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

ন্যাটোর ইউক্রেন মিশনে মোট ৭০০ জন কর্মী থাকবে। এর মধ্যে বেলজিয়ামের ন্যাটোর সামরিক সদর দফতর শ্যাপ, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার সরবরাহ কেন্দ্রেও সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।

পশ্চিমা সামরিক সহায়তার এই বৃদ্ধি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে রাশিয়া এবং একে বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ানোর অভিযোগ করেছে।