ফ্রান্সের নির্বাচন: ৪ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি

ফ্রান্সে চলমান আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটারদের বিপুল উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। রবিবার (৩০ জুন) প্রথম ধাপের ভোট হয়। এবারের নির্বাচনে ফ্রান্সে প্রথমবার সম্ভাব্য ডানপন্থি সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, যদি পূর্বাভাস সঠিক হয়ে ফ্রান্সে ডানপন্থি সরকার গঠিত হয় তাহলে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নে বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা করবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি ইউরোপীয় নির্বাচনে মারিন লে পেনের ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) দলের কাছে তার মধ্যপন্থি জোট পরাজিত হওয়ার পর আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। একসময় প্রায় হারিয়ে যাওয়া দলটি এখন ক্ষমতার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।

রবিবার সকালে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ইপসোস ফ্রান্সের গবেষণা পরিচালক মাথে উ গালার্ড বলেছেন, স্থানীয় দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোটারদের উপস্থিতি ছিল প্রায় ৬০ শতাংশ। যা ১৯৮৬ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর সর্বোচ্চ।

ফ্রান্সের জটিল নির্বাচনি ব্যবস্থার কারণে জাতীয় পরিষদের ৫৭৭ আসনের সুনির্দিষ্ট বণ্টন নিশ্চিত হওয়া কঠিন। ৭ জুলাই দ্বিতীয় ধাপের ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা জানা যাবে না।

মারিন লে পেন বলেছেন, আমরা একটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে যাচ্ছি। ২৮ বছর বয়সী জর্ডান বার্ডেলা ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

লে পেন তার দলকে বর্ণবাদ এবং ইহুদি বিরোধিতার মতো পরিচিতি থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। ভোটারদের মধ্যে ম্যাক্রোঁর প্রতি ক্ষোভ, জীবনের উচ্চ ব্যয় এবং অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগের মতো ইস্যুগুলোকে প্রচারণায় কাজে লাগিয়েছে লে পেনের দল।

যদি আরএন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তাহলে ফরাসি কূটনীতি নজিরবিহীন অস্থিরতার দিকে যেতে পারে। কারণ তখন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও বার্ডেলার মধ্যে ফ্রান্সের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দিতে পারে।

জর্ডান বার্ডেলা বলেছেন, তিনি বৈশ্বিক বিষয়গুলোতে ম্যাক্রোঁ চ্যালেঞ্জ করবেন। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তিনি ২০২৭ সাল পর্যন্ত মেয়াদ পূর্ণ করবেন।

আরএন-এর নিরঙ্কুশ জয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ফ্রান্সের অবস্থান সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। লে পেনের রুশপন্থি মনোভাবের ইতিহাস রয়েছে। দলটি বলছে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষায় তারা সহযোগিতা করবে। তবে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের মতো বিষয়ে সীমারেখা আরোপের পক্ষে দলটি।