খারকিভের সীমান্ত শহরে প্রবেশের দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের উত্তর-পূর্বের সীমান্ত শহর ভভচানস্কতে রুশ সেনারা প্রবেশ করেছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। ইউক্রেন বলেছে, সেখানে তুমুল লড়াই চলছে। সোমবার (১৩ মে) এই যুদ্ধক্ষেত্রের এই অগ্রগতির কথা উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

শুক্রবার খারকিভের সীমান্তে আকস্মিক স্থল হামলা চালানোর পর রুশ হামলার তীব্রতা বেড়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৯টি গ্রাম তারা দখল করেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর শুক্রবারের হামলাটি ছিল একটি বড় স্থল হামলা।

সীমান্ত অঞ্চল থেকে হাজারো ইউক্রেনীয় খারকিভ শহরের দিকে পালিয়েছেন। খারকিভ শহর যদি রাশিয়ার কামানের গোলার আওতায় চলে আসে তাহলে কী ঘটবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউক্রেনীয় কমান্ডাররা। 

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বলেছে, সর্বশেষ হামলায় প্রায় পাঁচ ব্যাটালিয়ন সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। কিয়েভ স্বীকার করেছে রুশ বাহিনী কৌশলগত সাফল্য পাচ্ছে।

তবে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় বাহিনী দাবি করেছে, এক দিনে রাশিয়া শতাধিক সেনা হারিয়েছে। রুশ বাহিনীর অগ্রগতি ঠেকাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা। 

খারকিভ থেকে ভভচানস্ক ৭৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সীমান্ত শহরটিকে কয়েকদিন ধরে বোমাবর্ষণ করে আসছে রুশ সেনারা। কর্মকর্তারা বলছেন, গ্লাইড বোমা দিয়ে এলাকাটিতে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া।

অঞ্চলটিতে ভভচানস্ক গুরুত্বপূর্ণ শহর হলেও এর নির্দিষ্ট সামরিক গুরুত্ব খুব বেশি নেই। তবে শহরটি রাশিয়া দখল করলে ইউক্রেনীয়দের মনোবল বড় ধাক্কা খাবে।

খারকিভের আঞ্চলিক প্রধান এলহ সিনিয়েহুবভ বলেছেন, নতুন দিকে ছোট ছোট দলের হামলার মাধ্যমে রাশিয়া পরিকল্পিতভাবে রণক্ষেত্রের সম্মুখভাগ বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে।

স্থানীয় টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশদের ঠেকিয়ে রেখেছে। কিন্তু তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই লড়াই নতুন গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

সিনিয়েহুবভ বলেছেন, প্রায় ছয় মানুষকে অঞ্চলটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রুশ মর্টার বা কামানের গোলা আঘাত হেনেছে অন্তত ৩০টি গ্রামে। 

সীমান্ত পার হয়ে এই হামলার ফলেই রাশিয়া খারকিভের দখল নিতে পারবে বলে মনে করছেন না স্থানীয় ইউক্রেনীয়রা। তবে এই নতুন হামলায় সেখানে বসবাসরতদের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়াচ্ছে। 

হতাশ ইউক্রেনীয় সেনারা বিবিসিকে বলেছেন, প্রতিরক্ষার ঘাটতি থাকায় রুশ সেনারা শুরুতে প্রায় হেঁটে আসতে পেরেছে। 

ভভচানস্ক ছেড়ে যাওয়া এক বাসিন্দা বলেছেন, তার বাড়ি থেকে অর্ধেক কিলোমিটার দূরে লড়াই হচ্ছিল। ভবচা নদীর একপাশে আমাদের সেনারা, অপর পাশে রুশরা।

তিনি আরও বলেছেন, ট্যাংকগুলো ক্রমাগত আসছে, গুলিবর্ষণ করে চলে যাচ্ছে। 

খারকিভ থেকে দূরে রুশ নিয়ন্ত্রিত ডনেস্কের একটি শহরে গোলাবর্ষণে দুজন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন রুশপন্থি মেয়র। রাশিয়া অধিকৃত আরেকটি শহর সরোকাইনে ইউক্রেনীয় হামলায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন। ইউক্রেন অবশ্য এই দুই শহরে হামলা নিয়ে ইউক্রেন অবশ্য মন্তব্য করেনি।

রাশিয়া আরও বলেছে, ক্রিমিয়ার একাধিক অঞ্চলে ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এর আগে রুশ কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, বেলগোরোদ অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের এক গোয়েন্দা সূত্র বলেছে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে একটি তেলের টার্মিনাল ও বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে হামলা করেছে।