রাশিয়ার ভুল পদক্ষেপে বাড়ছে ‘গোপন ড্রোন যুদ্ধে’র আশঙ্কা

ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ করে দিতে রাশিয়ার অক্ষমতা কিংবা অনিচ্ছা যুক্তরাষ্ট্রের সামনে নতুন সুযোগ খুলে দিয়েছে। যুদ্ধকবলিত দেশটিতে হয়েছে গোপনে ড্রোন হামলা চালানোর সুযোগ। মার্কিন ড্রোন কর্মসূচির সঙ্গে পরিচিত দেশটির সাবেক ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তারা এই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক।

সূত্রগুলো বলছে, বিশৃঙ্খলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনে কে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে তা নির্ধারণ করা যেমন অসম্ভব হয়ে উঠবে, তেমনি এই হামলা চালানো হলে বাইডেনের প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করা যাবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠাবে না বলে প্রকাশ্যে বলে আসছেন বাইডেন।

একজন সিনিয়র মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউক্রেনে সেনা না পাঠানো নিয়ে বাইডেনের মন্তব্য দেশটিতে গোপন ড্রোন অভিযানের পাশাপাশি সিআইএ’র আধাসামরিক বাহিনী পাঠানোর দুয়ার খুলে দিয়েছে।’

এসব গোপন অভিযানের সম্ভাব্য লক্ষ্যের মধ্যে থাকতে পারে কিয়েভের দিকে অগ্রসরমান ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ সামরিক বহর। তবে মস্কো কর্তৃক শনাক্তকরণ এড়াতে সম্ভাব্য মার্কিন অভিযান হবে সীমিত পরিসরে।

সাবেক সিনিয়র একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশিয়ানরা ফরেনসিক (বিশ্লেষণের) সময় পাবে না। আর যুক্তরাষ্ট্র দাবি করতে পারবে (ড্রোনগুলো) ইউক্রেনকে অনুদান দেওয়া হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ন্যাটো জোটের অন্য কোনও দেশ সক্রিয়ভাবে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে না। মস্কোর সামরিক বহরে কোনও হামলা চালানোর আগ্রহ তারা দেখায়নি। বাইডেন নিজে জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠালে বিশ্বের বড় দুই পরমাণু শক্তিধরের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও দাবি করেছেন, ‘এই ধরনের কোনও কর্মসূচির কথা তাদের সক্রিয় বিবেচনায় নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা অবশ্য এই ধরনের অভিযান চালানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। আর সাবেক কর্মকর্তারা এই ধরনের অভিযান চালানো হলে মস্কোর শনাক্ত করার সক্ষমতার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভূপাতিত করার পর ড্রোনের চালক শনাক্ত করা যায় না। আর উড়ন্ত অবস্থায় শনাক্ত করা খুবই কঠিন।’

গত সোমবার পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে ঊর্ধ্বতন একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেনের চেয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হাতে ভালো অস্ত্র ও ক্ষমতা রয়েছে। তবে এখনও ইউক্রেনের আকাশে রাশিয়া নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। পরিস্থিতি অবশ্য ‘বদলাচ্ছে’।