কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানের ‘অপ্ররোচিত’ গুলির জবাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত। সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভারত জানিয়েছে, তারা শুধু পাকিস্তানের হামলার জবাব দিয়েছে। এ নিয়ে টানা চতুর্থ রাতের মতো দুই দেশের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটলো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রবিবার মধ্যরাতের দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একাধিক পোস্ট থেকে ছোট অস্ত্রের গুলি চালানো হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মাঝে ৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এই হামলা সংঘটিত হয়েছে। তারাও হামলার জবাব দিয়েছে। সেনাবাহিনী আর কোনও বিস্তারিত তথ্য দেয়নি এবং কোনও হতাহতের খবরও জানায়নি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
কাশ্মীরে জঙ্গিদের খোঁজে প্রায় এক হাজার বাড়ি ও বনভূমি তল্লাশির পর প্রায় ৫০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। স্থানীয় পুলিশের এক কর্মকর্তা সোমবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত অন্তত নয়টি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর, ভারত তিনজন সন্দেহভাজন জঙ্গির মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাকিস্তানি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসলামাবাদ হামলায় কোনও ভূমিকা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
এই হামলা ভারতে ব্যাপক ক্ষোভ এবং শোকের সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও উঠেছে।
উভয় পারমাণবিক শক্তিধর দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে একের পর এক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভারত গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধুপানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তান ভারতীয় এয়ারলাইন্সের জন্য নিজের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
হামলার পর থেকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক সামরিক মহড়া চালিয়েছে। এর কিছু মহড়া নিয়মিত প্রস্তুতির অংশ, বলে এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপে নিরপরাধ মানুষের ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে সতর্কতার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের রাজনৈতিক নেতারা।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, এখন সময়... এমন কোনও ভুল পদক্ষেপ এড়ানোর যা মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে। অপরাধীদের শাস্তি দিন, কোনও দয়া দেখাবেন না। কিন্তু নিরপরাধ মানুষদের যেন বলির পাঁঠা না হতে হয়।
আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রীও ভারত সরকারকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে নিরপরাধ মানুষজন ভোগান্তির শিকার না হন।
এদিকে কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, তারা গত সপ্তাহের হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। যদিও প্রাথমিক একটি বার্তায় হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছিল।
দিল্লিভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থা বলেছে, এই গোষ্ঠী পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত হয়। গোষ্ঠীটি রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামেও পরিচিত। তারা দাবি করেছে, তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে দায় স্বীকারের বার্তাটি ‘সাইবার অনুপ্রবেশের’ ফল ছিল।