পশ্চিমবঙ্গের তিন বাসিন্দা কাশ্মীরের জঙ্গি হামলায় নিহত

পশ্চিমবঙ্গের তিন বাসিন্দা কাশ্মীরের জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন। তারা হলেন দক্ষিণ কলকাতার বৈষ্ণবঘাটার বিতান অধিকারী, সখেরবাজারের বাসিন্দা সমীর গুহ ও পুরুলিয়া ঝালদার বাসিন্দা পেশায় গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা মণীশরঞ্জন মিশ্র।

১৮ এপ্রিল স্ত্রী সোহিনী ও  ছেলেকে নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় কর্মরত বিতান। তার স্ত্রী সোহিনীও সেখানে বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত। ছুটিতে তারা কলকাতার বাড়িতে ফিরেছিলেন। এরপর তারা কাশ্মীর ঘুরতে যান। বৃহস্পতিবার তাদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। অভিশপ্ত ২২ তারিখ পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে অভিশপ্ত সেই রিসোর্টে ছিলেন বিতান।

বিতানের স্ত্রী বলেন, ওরা বলছিল, যারা যারা মুসলিম সরে যান। কলিমা বলুন, আর মেরে দিলো। যাদের কপালে সিঁদুর দেখেছে মেরে দিলো।

সোহিনীর চোখের সামনেই শেষ হয়ে যান বিতান। আপাতত শ্রীনগর হাসপাতালে রয়েছে বিতানের নিথর শরীর। তিন বছরের সন্তানকে কোলে আঁকড়ে হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় বিতানের স্ত্রী। নিহতদের ময়নাতদন্তের পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে। আপাতত স্বামীর সেই নিথর দেহ গড়িয়ার বাড়িতে নিয়ে আসার অপেক্ষায় বিতানের স্ত্রী সোহিনী।

বেহালার সখেরবাজারের বাসিন্দা সমীর গুহ। পরিবার নিয়ে দিন কয়েক আগেই কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বুধবারই ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু তা আর হলো না। স্বামীকে ছাড়াই কলকাতায় ফিরতে হচ্ছে সমীরের স্ত্রী শবরীকে।

জঙ্গিদের গুলিতে নিহত পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা মণীশরঞ্জন মিশ্র। কর্মসূত্রে থাকতেন হায়দরাবাদে। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবিতে কাজ করতেন তিনি। আগে রাঁচীতে ছিলেন, সম্প্রতি বদলি হয়ে চলে যান হায়দরাবাদে। সেখানেই স্ত্রী, এক ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মণীশ।  কথা ছিল, পহেলগাঁও থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাবেন। সেখানেই তার বাবা, মা এবং ভাইয়ের পরিবারেরও যাওয়ার কথা ছিল। একসঙ্গে সবাই ঘোরার পরিকল্পনা করেছিলেন মণীশ। সেই মতো মঙ্গলবার পুরুলিয়ার ঝালদার বাড়ি থেকে মণীশের পরিবার রওনা দেয় বৈষ্ণোদেবীর উদ্দেশে। কিন্তু ডালটনগঞ্জ পৌঁছোনোর পরই ফোনে জানতে পারেন, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে মণীশের।