চীনে ৫০ বছরের মধ্যে শক্তিশালী বাতাস, বাতিল ৮ শতাধিক ফ্লাইট

চীনের রাজধানী বেইজিং ও উত্তরাঞ্চলে প্রবল বাতাসের কারণে শতাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং ট্রেন চলাচল স্থগিত রয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে বেইজিংয়ের দুটি প্রধান বিমানবন্দরে ৮৩৮টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। 

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, বেইজিংয়ে ঘণ্টায় ৯৩ মাইল গতিবেগের বাতাস বইছে, যা গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। এই দমকা হাওয়া রবিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে পর্যটন স্পট ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। 

শুক্রবার থেকেই লক্ষাধিক মানুষকে ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিছু রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সতর্ক করে বলেছে, ৫০ কেজির কম ওজনের মানুষ ‘সহজেই বাতাসে উড়ে যেতে পারেন’। 

বেইজিংয়ের বিমানবন্দর এক্সপ্রেস সাবওয়ে লাইনসহ বেশ কিছু উচ্চগতির রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া, শহরের পার্কগুলো বন্ধ রয়েছে এবং প্রায় ৩০০টি গাছ উপড়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। 

বেইজিংয়ের ২২ মিলিয়ন বাসিন্দাকে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে বলা হয়েছে। বেশ কিছু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন পর্যন্ত কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। 

এক স্থানীয় বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, বেইজিংয়ের সবাই এ নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল। আজ রাস্তায় লোকজনের দেখা মিলছে না। তবে আমি যতটা ভেবেছিলাম, অবস্থা ততটা খারাপ নয়। 

অন্যদিকে, ঝেজিয়াং প্রদেশের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রবল বাতাসের কারণে গত রাত ও আজকের সব ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। আমি কয়েক দিন পর নতুন করে টিকিট কাটব। এখন মূলত বেইজিংয়ে আটকে আছি। 

মঙ্গোলিয়ার উপর দিয়ে আসা শীতল ঘূর্ণাবর্তের কারণে এই প্রবল বাতাসের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। শনিবারই সবচেয়ে বেশি বাতাস বইতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

চীন বাতাসের গতিবেগ মাপার জন্য ১ থেকে ১৭ পর্যন্ত স্কেল ব্যবহার করে। চীনা আবহাওয়া প্রশাসনের মতে, ১১ নম্বর বাতাসে ‘গুরুতর ক্ষতি’ হতে পারে, আর ১২ নম্বর বাতাসে ‘অতিবিপজ্জনক ধ্বংসযজ্ঞ’ ঘটতে পারে। এই সপ্তাহান্তে ১১ থেকে ১৩ নম্বর বাতাস বইতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে রবিবার নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।