থাইল্যান্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আরোপের ঘোষণা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এই কর্মকর্তাগুলোই গত মাসে অন্তত ৪০ জন উইঘুরকে চীনে ফেরত পাঠিয়েছিল। শুক্রবার (১৪ মার্চ) এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি অবিলম্বে উইঘুরদের প্রত্যার্পণের সাথে জড়িত বা সহায়ক বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন রুবিও। তবে এখনও তাদের নাম জানানো হয়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
উইঘুরদের ব্যাপক আটক এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে প্রায় লাখখানেক মানুষকে নির্যাতনের দায়ে অধিকার গ্রুপগুলো চীনকে ব্যাপক নির্যাতনের জন্য অভিযুক্ত করে আসছে। অবশ্য বেইজিং এই দাবিগুলো অস্বীকার করেছে।
রুবিও বলেছেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া উইঘুর মুসলিমদের ফেরত পাঠাতে চীন সেসব দেশের সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই তৎপরতা ঠেকাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীনে এই উইঘুররা অব্যাহত নির্যাতন ও গুম-খুনের শিকার হচ্ছে।’
২০১৪ সালে চীন থেকে পালানো তিনশর বেশি উইঘুরকে থাই কর্তৃপক্ষ আটক করেছিল। ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ আশ্রিত ৪০ জন উইঘুর মুসলিমকে চীনে ফেরত পাঠায়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, থাইল্যান্ড চীনের চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে উইঘুরদের লক্ষ্য করে অত্যাচার, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে চীনের সরকার। যেসব দেশে উইঘুররা আশ্রয় নিয়েছেন, সেসব দেশের সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে— তাদের যেন চীনে ফেরত পাঠানো না হয়।
আমরা চীনের প্রচেষ্টাগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে উইঘুর এবং অন্যান্য গোষ্ঠীকে চীনে ফেরত পাঠাতে বাধ্য করাদের বিরুদ্ধে সরকারগুলো ব্যবস্থা নিতে পারে।
২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ আশ্রিত ৪০ জন উইঘুর মুসলিমকে চীনে ফেরত পাঠায়।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার ঘটনার পর, থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা এবং বিচারমন্ত্রীগণ বলেন, তারা আগামী সপ্তাহে চীনের ওই উইঘুরদের পরিদর্শন করতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। বেশ কিছু থাই সাংবাদিককে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে এক ফেসবুক পোস্টে ব্যাংককে চীনের দূতাবাস বলেছে, ৪০ জন চীনা নাগরিককে পাচার করা হয়েছিল। তাদেরকে একটি চাটার্ড ফ্লাইটে শিনজিয়াংয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তারা ১০ বছরেরও বেশি সময় পর তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে বাড়ি ফিরে গেছে।'
রুবিও চীনের দীর্ঘকালীন সমালোচক এবং তিনি ২০২০ সালে উইঘুর এবং হংকংয়ের মানুষের অধিকারের জন্য সমর্থন দেওয়ার কারণে চীনের সরকারের দ্বারা দুইবার নিষেধাজ্ঞার শিকার হন।