শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় অঞ্চলের একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকার কাছে একটি হাতির দলের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের ধাক্কা লাগে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানী কলম্বোর পূর্বাঞ্চলীয় হাবারানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ছয় হাতির মৃত্যু হয়। ট্রেনটিও লাইনচ্যুত হয়ে যায়। অবশ্য যাত্রীদের মধ্যে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আরও দুইটি আহত হাতির চিকিৎসা চলছে। এটি শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনার মধ্যে একটি বলে উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যম এএফপি।
শ্রীলঙ্কায় হাতির সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা লাগার ঘটনা বিরল নয়। দেশটিতে মানুষ ও হাতির সংঘর্ষের ফলে প্রতি বছর বহু প্রাণহানি ঘটে। বিশ্বব্যাপী এই ধরনের সংঘর্ষে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে শ্রীলঙ্কায়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, গত বছরে মানুষ ও হাতির সংঘর্ষে ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ এবং প্রায় ৫০০টি হাতি মারা গেছে। শুধু ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রতি বছর গড়ে ২০টি হাতি মারা যায়।
বন উজাড় ও প্রাকৃতিক সম্পদের সংকটের কারণে হাতিরা ক্রমশ মানুষের বসবাস এলাকায় চলে আসছে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা ট্রেন চালকদের ট্রেনের গতি কমানোর এবং হাতিদের সতর্ক করার জন্য আগেভাগে হর্ন বাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
২০১৮ সালে একইভাবে একটি গর্ভবতী হাতি ও তার দুটি বাচ্চা হাবারানায় ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। ওই হাতিগুলো ভোরের দিকে একটি বড় দলের সঙ্গে রেললাইন পার হচ্ছিল।
গত বছরের অক্টোবর মাসে হাবারানার কাছাকাছি মিনেরিয়ায় আরেকটি ট্রেনের ধাক্কায় দুইটি হাতি মারা যায় এবং একটি হাতি আহত হয়।
শ্রীলঙ্কায় আনুমানিক ৭ হাজার বন্য হাতি রয়েছে। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির জনগণ হাতিদের অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখে। দেশটিতে হাতি হত্যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, যার শাস্তি কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে।