ধেয়ে আসছে শক্তিশালী টাইফুন, তাইওয়ানে শাটডাউন

তাইওয়ানের দিকে এগিয়ে আসছে শক্তিশালী টাইফুন কং-রে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সতর্কতামূলকভাবে দেশটিতে শাটডাউন ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। সব শহর ও কাউন্টিতে একটি দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর্থিক বাজারে লেনদেন বন্ধ এবং শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে আকারের সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

কং-রে এদিন দুপুর ২টার দিকে পাহাড়ি ও অল্প জনবহুল পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। তাইওয়ানের সেন্ট্রাল ওয়েদার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে ঝোড়ো বাতাস ও মুষলধারে বৃষ্টি প্রায় পুরো দ্বীপকে প্রভাবিত করছে।

এক পর্যায়ে একটি সুপার টাইফুন কং-রে রাতারাতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে জানানো হয়। তবে এটি ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটারের বেশি (১৫৫ মাইল) বেগে বইছিল, যা গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ের ঝুঁকি বিবেচনায় ক্যাটাগরি ৪ মাত্রার হারিকেনের সমতুল্য শক্তিশালী।

তাইওয়ানের আবহাওয়া প্রশাসন ঝড়টিকে একটি ‘স্ট্রং টাইফুন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটি তাইওয়ানে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ের স্তর হিসেবে পরিচিত। প্রশাসন আরও জানায়, ১৯৯৬ সালের পর থেকে দ্বীপে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় টাইফুন হতে যাচ্ছে কিং-রে।

আবহাওয়াবিদ জিন হুয়াং বলেছেন, পূর্ব উপকূলে আঘাত হানার পর কিছুটা দুর্বল হয়ে তাইওয়ান প্রণালীর দিকে ধেয়ে যাবে ঝড়টি। দ্বীপরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের ঝোড়ো বাতাসের কারণে বিপদ এড়াতে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জিন হুয়াং বলেন, ঝড়ের আকার অনেক বড় এবং বাতাসও বেশ প্রবল।

তাইতুং এর পূর্ব কাউন্টিতে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে (১০০ মাইল) বাতাস বইবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রশাসনের জানিয়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা হাওয়াসহ পূর্ব তাইওয়ানে ১ দশমিক ২ মিটার (৩ দশমিক ৯ ফুট) পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

পূর্ব প্রস্তুতিমূলকভাবে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহযোগিতার জন্য ৩৬ হাজার সেনাকে মোতায়েন রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ জনকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তাইওয়ানের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সব অভ্যন্তরীণ এবং ২৯৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। দূরবর্তী দ্বীপগুলোতে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত ১৩৯টি ফেরি পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

পাহাড় ও উপকূলে মানুষকে চলাচলের বিষয়ে সতর্ক করেছে সরকার।

উপক্রান্তীয় তাইওয়ানে প্রায়ই টাইফুন আঘাত হানে। সর্বশেষ চলতি মাসের শুরুতে টাইফুন ক্র্যাথনের আঘাতে দেশটিতে চারজন নিহত হয়েছিল।