মালয়েশিয়ায় শিশু নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার আরও শতাধিক

মানবপাচার ও শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মালয়েশিয়ার একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইখওয়ান গ্রুপ (জিআইএসবি)-এর ওপর সেপ্টেম্বরে পুলিশি অভিযান চালিয়ে শতাধিককে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার পরও সংস্থাটি তাদের বড় আকারের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এবার আরও শতাধিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।

জিআইএসবি পরিচালিত ২০টি কেয়ার হোমে নির্যাতিত হওয়ার সন্দেহে ৪০৩ শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ তখন শিক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ ১৭১ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে। তবে গ্রুপের কথিত অপরাধের আরও বিশদ বিবরণ বেরিয়ে আসার পর, আরও শতাধিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর মধ্যে নতুন অভিযোগ, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর পর্যন্ত জিআইএসবির পাঁচ সদস্য হুমকি দিয়ে মানুষ পাচার করেন। তাদের অপব্যবহার ও শোষণ করা হয়।

অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন দক্ষিণাঞ্চলীয় জোহর রাজ্যে জিআইএসবি-র মালিকানাধীন একটি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক ছিলেন। রবিবার তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের চারটি অভিযোগ আনা হয়। পাচার হওয়া চারজনের মধ্যে তিনজন নারী ও ৩০ থেকে ৫৭ বছর বয়সী একজন পুরুষ রয়েছে। অভিযুক্ত তৃতীয় ব্যক্তি একই রিসোর্টের একজন কর্মী। তার বিরুদ্ধে ১৬ বছর বয়সী একজনকে যৌন নির্যাতনের দুটি অভিযোগ রয়েছে।

২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১ অক্টোবরের মধ্যে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনায় অন্তত দুই সন্দেহভাজন এখনও পলাতক।

পুলিশের মতে, এক থেকে ১৭ বছর বয়সী আরও শশি শত ভুক্তভোগী জিআএসবি পরিচালিত কেয়ার হোমে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন সহ্য করেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং অন্য শিশুদের ওপর যৌন আচরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যকলাপ ও সংগঠিত অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জিআইএসবির প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরা। পুলিশ তদন্ত অব্যাহত থাকায় তারা একটি ‘ন্যায্য তদন্ত’ চেয়েছেন৷

এর আগে সংস্থাটির প্রধান নাসিরুদ্দিন মোহম্মদ আলী কেয়ার হোমগুলোতে ‘দুয়েকটি যৌন নিপীড়নের ঘটনা’ থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘যদিও এ ধরনের একটি বা দুটি ঘটনা ছিল। তবে সবগুলো অভিযোগকে কেন একই ধরণে ফেলা হচ্ছে?’

১৯৯৪ সালে মালয়েশিয়া সরকার মালয়েশিয়াভিত্তিক আল-আরকাম ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বর্তমানে নিষ্ক্রিয় এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে জিআইএসবি। তবে তারা নিজেদের ইসলামিরীতি ভিত্তিক একটি শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে দাবি করে।