আশ্রয়কেন্দ্রে শিশুদের যৌন নির্যাতনের কথা স্বীকার করলো মালয়েশিয়ার ইসলামি প্রতিষ্ঠানটি

শিশুদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেছেন মালয়েশিয়ার একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইখওয়ান সার্ভিসেস অ্যান্ড বিজনেস (জিআইএসবি) হোল্ডিংস-এর প্রধান নির্বাহী নাসিরুদ্দিন আলী। তিনি বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যৌন নির্যাতনের এক বা দুটি ঘটনা রয়েছে। তবে তিনি অসদাচরণের অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। এ বিষয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জিআইএসবি পরিচালিত এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে যৌন নিপীড়নের শিকার ৪ শতাধিক শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ২০১ জন ছেলে ও ২০১ জন মেয়ে শিশু ছিল, যাদের বয়স এক থেকে ১৭ বছর।

জিআইএসবি একটি ইসলামিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর্মীদের শোষণের অভিযোগও রয়েছে।

পুলিশ শুক্রবার জানিয়েছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনেক শিশুর শরীরে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে ১৩ জন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

জিআইএসবি বলেছে, তারা এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করে না। এমনকি শ্রমিকদের অপব্যবহার ও শোষণের সব অভিযোগও অস্বীকার করেছে।

তবে শনিবার জিআইএসবি’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে প্রধান নির্বাহী নাসিরুদ্দিন আলী বলেছেন, কোম্পানি কিছু অনির্দিষ্ট আইন ভঙ্গ করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমি আইনকে দোষারোপ করতে চাই না। এটি সত্য যে, আমরা আইনের চোখে কিছু ভুল করেছি। তবে প্রথমে কিছু পরামর্শ বা আলোচনা কি হতে পারে না?’

নাসিরুদ্দিন বলেন, শিশুদের সঙ্গে এ ধরনের অশ্লীল যৌন আচরণ করা এবং তাদেরকে সেগুলো শেখানো বিষয়ে পুলিশের অভিযোগটি ‘জঘন্য’। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এই ধরনের নির্যাতনের ঘটনা যে ঘটেছে তা তিনি স্বীকার করেছেন।

‘যদিও এ ধরনের একটি বা দুটি ঘটনা ছিল। তবে সবগুলো অভিযোগকে কেন একই ধরণে ফেলা হচ্ছে?’

১৯৯৪ সালে মালয়েশিয়া সরকার মালয়েশিয়াভিত্তিক আল-আরকাম ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বর্তমানে নিষ্ক্রিয় এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে জিআইএসবি। তবে তারা নিজেদের ইসলামিরীতি ভিত্তিক একটি শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে দাবি করে।

শনিবার একটি বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা মন্ত্রিসভা, জাতীয় ধর্মীয় বিষয় পরিষদ এবং শাসকদের সম্মেলনে জিআইএসবি জড়িত সন্দেহজনক বিচ্যুতিমূলক শিক্ষার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আনবে। মালয়েশিয়ার নয়জন রাজকীয় শাসক আছেন যারা দেশটিতে ইসলামের রক্ষক হিসেবে কাজ করেন।

নাসিরুদ্দিন বলেন, জিআএসবি’র কিছু অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পদ জব্দ করেছে।

তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াধীন।

এর আগে, এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারুদিন হোসেন বলেছিলেন অভিযানের সময় ‘উস্তাজ’ বা ইসলামিক ধর্মীয় শিক্ষকসহ ১৭১ জন প্রাপ্তবয়স্ককে গ্রেফতার করেছিল তারা।