চাবাহার বন্দর: ভারত-ইরান চুক্তির পর নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর পরিচালনা নিয়ে ভারতের চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (১৪ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, তেহরানের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়টি বিবেচনাকারী যেকোনও দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

২০১৬ সালে ইরানের পাকিস্তান সীমান্তের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দর উন্নয়নে তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল দিল্লি। সোমবার বন্দরটির আরও উন্নয়নে ১০ বছরের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশ দুটি।

ভারতের নৌপরিবহনমন্ত্রী চুক্তি স্বাক্ষরকে ‘ভারত-ইরান সম্পর্কের ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। গত তিন বছরে ইরান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের ওপর ৬০০টির বেশি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে চুক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, ইরানের সঙ্গে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রয়েছে এবং ওয়াশিংটন তা বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেছেন, যেকোনও সত্তা–ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য করার বিষয়টি বিবেচনাকারী যে কারও–তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন যে তারা নিজেদের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই মন্তব্যের বিষয়ে ভারত এখন পর্যন্ত কোনও বক্তব্য দেয়নি।

২০১৮ সালের শেষ দিকে ভারত চাবাহার বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। বন্দরে ভারতীয় পণ্যের জন্য একটি ট্রানজিট রুট চালু করা হয়েছে। এসব পণ্য আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় যাচ্ছে। এর ফলে পাকিস্তানের স্থলসীমান্ত ব্যবহার করতে হচ্ছে না ভারতকে। দুই পারমাণবিক প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের বৈরী সম্পর্ক রয়েছে। 

কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত চাবাহার বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আফগানিস্তানে আড়াই মেট্রিক টন গম ও দুই হাজার টন ডাল পরিবহন করা হয়েছে।

সোমবার ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বলেছে, ইন্ডিয়ান পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) ও পোর্ট অ্যান্ড ম্যারিটাইম অর্গানাইজেশন অব ইরান বন্দরটির উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী মেহেরদাদ বাজরপাশ বলেছেন, চুক্তির আওতায় আইপিজিএল মোট ৩৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, এই চুক্তি বন্দরটিতে আরও বড় বিনিয়োগের পথ সুগম করবে।