অভ্যুত্থানের তিন বছর পূর্তিতে মিয়ানমারে নীরব প্রতিবাদ

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের তিন বছর পূর্তি হয়েছে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ঘরে বসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। শহরের বিভিন্ন ব্যস্ত জায়গাগুলো খালি ছিল। কোনও মানুষ নেই। এ যেন তাদের নীরব প্রতিবাদ। জনসাধারণকে বাড়ির ভেতরে থেকে এবং ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরবানা-চ্যাম্পেইন ইনডিপেন্ডেট সংবাদমাধ্যমে পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, ইয়াঙ্গুনে ব্যস্ত মোড় বা রাস্তা খালি হয়ে আছে। কোনও মানুষ নেই। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে, মান্দালয়, মাওলামাইন ও মনিওয়াতেও একইরকম দৃশ্য দেখা গেছে। রাস্তা-ঘাটে কোনও মানুষ নাই।

জান্তা সরকারের তিন বছরের শাসনকাল নিয়ে থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার-বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হরসি বলেন, অং সান সুচিসহ রাজনৈতিক নেতাদের আটক করার তিন বছর পার হয়ে গেছে। ফলে ক্ষমতা ধরে রাখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

কিন্তু সংশয় প্রকাশ করে হরসি বলেন, যেকোনও সময় যুদ্ধ করতে প্রস্তুত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। বিমান হামলা ও দূরপাল্লার কামান ব্যবহারের সক্ষমতা কমলেও সহিংসতার জন্য ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে বাহিনীটি।

জান্তা সরকারের প্রতি সাধারণের মনোভাবের কথা তুলে ধরে পলাতক গণতন্ত্রপন্থি কর্মী নান লিন বলেন, রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ মেনে নেবে না মিয়ানমারের জনগণ। তাছাড়া সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনকেও মেনে নেবে না।

এই পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোনও পথ নেই। আন্দোলনকে আরও বেগবান করা হবে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আবারও ছয় মাস জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে জান্তা সরকার। মিয়ানমারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে সাহায্য করা আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে।

মধ্য মিয়ানমারের একজন কর্মী কো তাইজার সান বলেন, মিয়ানমারের জনগণ কখনোই সন্ত্রাসী, ক্ষমতা দখলকারী জান্তার কাছে মাথা নত করবে না। সামরিক বাহিনীর ভয় দেখানো সত্ত্বেও অনেক মানুষ নীরব ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন।

স্থানীয় পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের (বার্মা) মতে, গত তিন বছরে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে বন্দি করেছে জান্তা সরকার।