উত্তরকে বার্তা দিতে দ. কোরিয়ায় পারমাণবিক সাবমেরিন পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

চল্লিশ বছরের মধ্যে প্রথমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক সাবমেরিন পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির মধ্যে এই ঘোষণা দিলো সিউলের নিরাপত্তা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ ওয়াশিংটন। দেশটির নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দৃঢ়তার প্রদর্শন হিসেবে এটি পাঠানো হচ্ছে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

বুধবার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্র যান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়ল। সফরে তিনি বাইডেনের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন।  সম্মেলন শেষে এক যৌথ ঘোষণায় এই পারমাণবিক সাবমেরিন সিউলের পাঠানোর কথা ঘোষণা দেওয়া হয়।

যৌথ ঘোষণাকে দ্বীপাক্ষিক সম্পর্কের ‘অভূতপূর্ব’ ঘনিষ্ঠতা বলে আখ্যা দেন ইউন।

তিনি বলেন, ‘কোরীয় প্রজাতন্ত্রের প্রতিরক্ষার জন্য দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পুনর্ব্যক্ত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।’

১৯৯১ সালে কোরীয় উপদ্বীপ থেকে সব পারমাণবিক অস্ত্র প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তী বছর পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা, উৎপাদন, গ্রহণ, সঞ্চয় বা ব্যবহার থেকে বিরত থাকার যৌথ বিবৃতি দেয় উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু বারবার এই প্রতিশ্রুতি ভাঙতে থাকে পিয়ংইয়ং। উত্তরের ক্রমাগত পারমাণবিক হুমকির জবাবে সম্প্রতি যৌথ সামরিক মহড়া চালায় ওয়াশিংটন ও সিউল।

হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘কৌশলগত অস্ত্র নিয়মিত মোতায়েনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও দৃশ্যমান করে তুলতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ১৯৮০ সালের পর এই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন ব্যালিস্টিক সাবমেরিন পাঠানো হচ্ছে।’

মার্কিন নৌবাহিনীর পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিনগুলো ইউএস এসএসবিএন নামে পরিচিত। এগুলোর অবস্থান সব সময় গোপন রাখা হয়। খুব কম সময় এগুলো বিদেশি বন্দরে অবস্থান করে। যুদ্ধের সময় এগুলো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার এক অবসরপ্রাপ্ত সাবমেরিন ক্যাপ্টেন ও স্কোয়াড্রন লিডার মুন কিউন-সিক বলেন, এই সাবমেরিনের সফরের কারণে উত্তর কোরিয়া অনেক চাপে পড়বে। কারণ সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র এসব সাবমেরিনের অবস্থানের কথা প্রকাশ করে না।

যুক্তরাষ্ট্রের এসব সাবমেরিন বুমার্স নামেও পরিচিত। প্রতিটি ওহাইয়ো-ক্লাস সাবমেরিনে ২০টি ট্রাইডেন্ট আইআই ডি৫ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র ১২ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আটটি পারমাণবিক ওয়ারহেড ছুড়তে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা, নিউ ইয়র্ক পোস্ট