বিতর্কিত অর্থনৈতিক সংস্কারের বিরোধিতায় বিক্ষোভে উত্তাল আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলের বিতর্কিত অর্থনৈতিক সংস্কার প্যাকেজ অনুমোদন হয়েছে সিনেটে। প্যাকেজের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পরপরই বুধবার (১৩ জুন) রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দাঙ্গা পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ও পাথর ছুড়ে মারে এবং গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের অভিযোগ,সরকারের এই পদক্ষেপে লাখ লাখ আর্জেন্টাইন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করেছে দাঙ্গা পুলিশ। এতে কমপক্ষে ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে।

আর্জেন্টিনার স্থানীয় মিডিয়া সংঘর্ষের এ ঘটনাকে যুদ্ধক্ষেত্র বলে বর্ণনা করেছে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

আর্জেন্টিনার গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেই বর্তমান ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলে ক্ষমতায় এসেছেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি মন্ত্রিসভার আকার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন, ৫০ হাজার সরকারি চাকরিজীবী ছাঁটাই করেছেন,নতুন সরকারি প্রকল্পের চুক্তি স্থগিত করেছেন এবং পরিবহণ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি বাতিল করেছেন। তারপরও দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।

পিছিয়ে পড়া অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে তাই তিনি এক সংস্কার প্রস্তাব করেছেন, যার মধ্যে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা,পেনশন কাটছাঁট এবং শ্রমিকদের অধিকার হ্রাস করার বিষয়টিও রয়েছে।

মিলের এই অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে দেশটির বামপন্থী রাজনৈতিক দল, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সামাজিক সংগঠনগুলি।

তারপরও বুধবার সেনেটে তার সংস্কার প্রস্তাব পাস হয়। ভোটাভুটিতে প্রথমে প্রস্তাবটির পক্ষে-বিপক্ষে সমান ৩৬-৩৬ ভোট পড়েছিল। তখন সিনেটের প্রধান ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্তোরিয়া ভিলারুয়েল প্রস্তাবের পক্ষে ভোটটি দিয়ে এ পরিস্থিতির অবসান ঘটান।

আর্জেন্টিনার অর্ধেকের বেশি মানুষ বর্তমানে দারিদ্রের মধ্যে বসবাস করছেন। বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি এখন প্রায় ৩০০ শতাংশের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে।