টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সিইও

ওশেনগেটের মালিকানাধীন টাইটান সাবমারসিবলের নিরাপত্তা নিয়ে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টক্টন রাশ সেগুলোকে ভিত্তিহীন উদ্বেগ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এক শীর্ষস্থানীয় গভীর সমুদ্র খননকারীর সঙ্গে ইমেইল চালাচালিতে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার পথে সেই টাইটান বিধ্বস্ত হলে চার আরোহীর সঙ্গে নিহত হয়েছেন সেই সিইও। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

বিবিসির কাছে আসা কয়েকটি ইমেইল বার্তা অনুসারে, রব ম্যাককলাম নামের বিশেষজ্ঞ ওশেনগেটের সিইও স্টক্টন রাশকে টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, টাইটানের যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। আহ্বান জানিয়েছিলেন স্বতন্ত্র সংস্থা দ্বারা স্বীকৃতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত সাবটির ব্যবহার বন্ধ রাখা।

এই উদ্বেগের জবাবে স্টক্টন রাশ বলেছিলেন, নিরাপত্তার যুক্তিকে হাতিয়ার করে উদ্ভাবনকে থামাতে চাওয়া ব্যবসায়ীদের কূট চাল দেখতে দেখতে তিনি ক্লান্ত।

উত্তপ্ত মেইল বিনিময়ের পর ওশেনগেটের আইনজীবী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হুমকি দিয়েছিলেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ম্যাককলাম। ২০১৮ সালে এই ই-মেইল চালাচালি হয়েছিল।

টাইটান বিধ্বস্ত হয়ে মারা যাওয়া পাঁচ আরোহীদের একজন ছিলেন স্টক্টন রাশ। ম্যাককলামের উদ্বেগের বিষয়ে ২০১৮ সালে তিনি লিখেছিলেন, আমরা প্রায়ই শুনে আসছি ভিত্তিহীন চিৎকার ‘আপনি কাউকে হত্যা করতে চলেছেন’। আমি এটিকে একটি গুরুতর ব্যক্তিগত অপমান হিসেবে গ্রহণ করছি।

ম্যাককলাম জানিয়েছেন, তিনি বারবার কোম্পানিটিকে টাইটানকে পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে গভীর সমুদ্রে বাণিজ্যিক যাত্রার জন্য এটিকে ব্যবহার না করার পক্ষেও যুক্তি তুলে ধরেছিলেন।

এসব ইমেইলের বিষয়ে কোম্পানিটি কোনও মন্তব্য করেনি।

বিশেষজ্ঞরাও টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একই সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগে গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়েও আলোকপাত করছেন।

উল্লেখ্য, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে রবিবার (১৮ জুন) পাঁচ আরোহীসহ হারিয়ে যায় সাবমেরিন ‘টাইটান’। যাত্রা শুরুর একঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই পানির ওপরে থাকা মূল জাহাজের সঙ্গে ডুবোযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার মার্কিন কোস্টগার্ড জানায়, সাবমেরিনটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাঁচ আরোহী মারা গেছেন। কেন এই দুর্ঘটনা ঘটলো সেটির কারণ অনুসন্ধান করাতে এখন মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে।