দক্ষিণ চীন সাগরসহ আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংকট মোকাবিলায় ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) আরম্ভ হওয়া এই বার্ষিক ‘বালিকাতান’ মহড়ায় দুদেশের ১৪ হাজারের বেশি সেনা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এবারের মহড়াকে ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের প্রস্তুতি যাচাই’ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন বাহিনীর মহড়া পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেমস গ্লিন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মহড়ায় উভয় দেশের সামরিক সক্ষমতা একাধিক পরিস্থিতিতে যাচাই করা হবে।
ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা, সামুদ্রিক আক্রমণ প্রতিরোধ এবং একটি পুরোনো ফিলিপাইন নৌবাহিনীর জাহাজ ডুবিয়ে সামুদ্রিক আঘাতের সক্ষমতা যাচাইয়ের মতো একাধিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ চীন সাগর থেকে শুরু করে সবরকম আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে যুদ্ধের সক্ষমতা যাচাই করা হবে।
বার্ষিক বালিকাতান (কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা) মহড়া আগামী ৯ মে পর্যন্ত চলবে। এতে নেমেসিস অ্যান্টি-শিপ মিসাইল সিস্টেম এবং হিমার্স রকেট লঞ্চারের মতো উন্নত মার্কিন অস্ত্র প্রদর্শিত হবে। ফিলিপাইনও নিজেদের আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় অংশ নেবে।
এবারের মহড়ায় প্রায় নয় হাজার মার্কিন এবং পাঁচ হাজার ফিলিপিনো সেনা অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া, ছোট ছোট দল নিয়ে অংশগ্রহণ করছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। ১৬টি দেশ পর্যবেক্ষক হিসেবে যুক্ত হয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই দক্ষিণ চীন সাগর এবং তাইওয়ানকে ঘিরে বেইজিংয়ের কর্মকাণ্ডে পূর্ব এশিয়া চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাগরে চীনের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকায় আধিপত্য মেনে নিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ফিলিপাইনসহ অন্যান্য উপকূলীয় দেশগুলো। আন্তর্জাতিক আদালত চীনকে সমুদ্র আইন মেনে চলার আদেশ দিলেও সেসবের থোড়াই পরোয়া করে নিজের মতোই চলছে বেইজিং।
এসবের মধ্যে এরকম মহড়া পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার আশঙ্কা রয়েছে কিনা, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা।
তবে এই মহড়া কোনো নির্দিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে নয় বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন ফিলিপাইনের মহড়া পরিচালক মেজর জেনারেল ফ্রান্সিসকো লরেঞ্জো। তিনি বলেন, যে কোনও আঞ্চলিক সংঘাত নিরুৎসাহিত করতে এই মহড়া ভূমিকা রাখবে। বিশেষত, সম্ভাব্য হুমকি বা আগ্রাসন প্রতিরোধের প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে।