গাজায় সেবাকর্মী হত্যা: ব্যর্থতা স্বীকার করলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনী

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পেশাগত ব্যর্থতার কারণে গাজায় ১৫ জন জরুরি সেবাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) তদন্তে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেদিন সেনাসদস্যদের ভুল বোঝাবুঝি এবং আদেশ অমান্য করার একাধিক আলামত পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, জরুরি কর্মীদের শত্রুপক্ষের লোক মনে করে গুলি ছুঁড়েছিল ইসরায়েলি সেনারা। সামারি এক্সিকিউশানের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তারা।

কোনও সুষ্ঠু প্রক্রিয়া ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার একটি সামরিক প্রচলনকে বলা হয় সামারি এক্সিকিউশান। সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে এ ধরনের শাস্তির বাস্তবায়ন দেখা যায়।

গত ২৩ মার্চ, প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্স, একটি জাতিসংঘের গাড়ি ও একটি ফায়ার ট্রাকের বহরে আইডিএফ গুলি চালায়। এতে ১৪ জন জরুরি কর্মী ও এক ইউএন কর্মী নিহত হন।

তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাস্থলকে ‘শত্রুভাবাপন্ন ও বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র’ উল্লেখ করে দাবি করা হয়, গাড়িগুলো দ্রুত এগিয়ে আসায় মাঠপর্যায়ের কমান্ডার তাৎক্ষণিক হুমকি অনুভব করেন। রাতে দৃশ্যমানতা কম থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলেও দাবি করা হয়।

আইডিএফ আরও জানিয়েছে, নিহত কর্মীদের মধ্যে ছয়জন ছিল হামাস সদস্য। তবে এখনও কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি।

এছাড়া, তদন্তের সময় অসম্পূর্ণ ও অসত্য তথ্য দেওয়ার ঘটনা সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমান্ডারকে অপসারণ করা হয়েছে। আরেক কমান্ডিং অফিসারকে ঘটনার সার্বিক দায়িত্বের জন্য তিরস্কার করা হবে বলেও জানিয়েছে আইডিএফ।

অবশ্য, আইডিএফের বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় পিআরসিএস। তাদের এক মুখপাত্র এই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বলেছেন, প্রতিবেদনটি অপ্রাসঙ্গিক এবং ক্ষেত্রবিশেষে ব্যক্তিগত ভুল প্রমাণ করে ঊর্ধ্বতনদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

এই তদন্ত প্রতিবেদনকে যথেষ্ট মনে করছেন না গাজায় কর্মরত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, এখানে সুষ্ঠু জবাবদিহিতের অভাব স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। এতে আন্তর্জাতিক আইনের অবজ্ঞা করা হয় যা বিশ্বকে আরও বিপজ্জনক করে তোলে।

তিনি আরও বলেন, জবাবদিহিতা ছাড়া আমাদের রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত আইন ধীরে ধীরে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়ে। এতে নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।