মার্কিন প্রশাসনকে ব্যবসার মতো পরিচালনার উদ্দেশে সরকারি কর্মীদের শ্রেণিবিন্যাসে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এই ঘোষণার পর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে আরও সহজে ব্যাপক হারে কর্মী ছাঁটাই করতে পারবেন ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প বলেছেন, নীতি নির্ধারণে (পলিসি ম্যাটার্স) কাজ করা ক্যারিয়ার সরকারি কর্মীদের এখন থেকে ‘শিডিউল পলিসি/ ক্যারিয়ার’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
নতুন সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, অবশেষে ফেডারেল সরকারকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালনা করা যাবে।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই প্রশাসনের কলেবর কমানোর জন্য একাধিক নির্বাহী আদেশ সই করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার একটি আদেশ অনুযায়ী সরকারি কর্মীদের শ্রেণীভুক্তিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের ফলে অসংখ্য ব্যক্তি ‘এমপ্লয়ি অ্যাট উইল’ এ পরিণত হবেন, যার অর্থ হচ্ছে- সরকারি চাকরির ঐতিহ্যবাহী সুরক্ষা সুবিধা তারা আর পাবেন না। বরং কর্মী ছাঁটাই বা নতুন লোক নিয়োগে ঊর্ধ্বতনরা প্রায় জবাবদিহির আওতার বাইরে থাকবেন।
ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের অধ্যাপক ডন ময়নিহানের আশঙ্কা, এই আদেশ বাস্তবায়িত হলে প্রায় ২৩ লাখ সরকারি কর্মীবাহিনীর বড় একটা অংশই ঝুঁকির মুখে থাকবেন। কেননা, সরকারি চাকরিজীবীরা কোনও একভাবে নীতিনির্ধারণে যুক্ত থাকেনই, ফলে শ্রেণিবিন্যাসে পরিবর্তন আসতে পারে এমন ব্যক্তির সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে।
প্রথম মেয়াদের শেষ দিকেও প্রায় এই ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। তখন শিডিউল-এফ নামে একটি শ্রেণি করেছিলেন তিনি। ওই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছিল। পরে জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে ওই ধারা বাতিল করেন।
তবে এবারের আদেশের পরিধি আগের চেয়ে অনেক বড় বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ময়নিহান। তিনি বলেছেন, ব্যাপকহারে ছাঁটাই শুরু হওয়ার আগে আমরা লাখ লাখ মানুষের শ্রেণীভুক্তিতে পরিবর্তনের কথা শুনতে পারব।
হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই বিভিন্ন উপায়ে কর্মী ছাঁটাই করে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই কাজে তাদের অন্যতম সহযোগী সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং ধনকুবের ইলন মাস্ক পরিচালিত সংস্থা সরকারি সক্ষমতা বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি বা ডোজে)।
রয়টার্স পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, কর্মী ছাঁটাই, আর্থিক প্রণোদনার বিনিময়ে পদত্যাগ, কথিত আগাম অবসর বা ছাঁটাইয়ের জন্য চিহ্নিত হওয়ার কর্মীর মোট সংখ্যা প্রায় দু লাখ ৬০ হাজার।