গাজায় বাফার জোন থেকে সরবে না ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধ শেষ করার বন্দোবস্ত হলেও বাফার জোনে অবস্থান করবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এ কথা বলেছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েলি কাটজ। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, পূর্বের মতো এবার আর কোনও দখলিকৃত এলাকা ছেড়ে দেবে না ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ)। গাজায় সাময়িক বা স্থায়ী সমাধান হওয়ার আগ পর্যন্ত শত্রুপক্ষ ও স্থানীয়দের মধ্যে বাফার হিসেবে নিরাপত্তা অঞ্চলে অবস্থান করবে আইডিএফ।

উল্লেখ্য, যুদ্ধরত দুটি পক্ষ বা দেশের মধ্যে কোনও এলাকা, যা আকস্মিক যুদ্ধ এড়াতে তৈরি করা হয়, তাকে বাফার জোন বলে। এসব জোনে সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বাহিনী অবস্থান নেয়, যেমন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী।

প্রায় দুমাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত মাসে আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এবার নিরাপত্তা অঞ্চলের নামে বিশাল এক অংশের দখল নিয়েছে আইডিএফ, যা গাজার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি উপত্যকার দক্ষিণে এবং উপকূল ঘেঁষে জড়ো হচ্ছেন।

সেনাবাহিনীর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল এখন গাজার প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। বিশেষ করে দক্ষিণ গাজার রাফাহ সীমান্ত শহর এবং সেখান থেকে খান ইউনিসের মধ্যবর্তী ‘মোরাগ করিডোর’ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা দখলে নিয়েছে। এছাড়া গাজার কেন্দ্রীয় নেতজারিম এলাকা ও উত্তরে গাজা সিটির পূর্বে শেজাইয়া এলাকাও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আইডিএফ।

সেনাবাহিনীর দাবি, গত ১৮ মার্চ পুনরায় আক্রমণ শুরুর পর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের একাধিক শীর্ষ কমান্ডারসহ কয়েকশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির তোয়াক্কা না করে পুনরায় হামলা শুরু করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় দেশগুলো। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে অন্তত এক হাজার ৬৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্তত চার লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন। 

ফিলিস্তিনিদের নিয়ে পুরো বিশ্বজুড়ে আবেগ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তাদের উদ্বেগের জবাবেই যেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজা থেকে যারা চলে যেতে চায়, তাদের সে চাওয়া বাস্তবায়নে পরিকল্পনা তৈরি করবে ইসরায়েল।

অবশ্য, লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে কোন দেশ নিতে সম্মত হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।