মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার একটি ভিত্তিপ্রস্তর হলো মাগা বা মেইক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন প্রচারণা। ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র তার গৌরব হারিয়ে ফেলেছে,যা ফিরে পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। সে পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই সম্প্রতি তিনি হাত দিয়েছেন জাদুঘর ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্মিথসোনিয়ান ইন্সটিটিউশনের দিকে।
গত মাসের শেষ নাগাদ এক নির্বাহী আদেশ প্রদান করেন ট্রাম্প। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন থেকে মার্কিন ইতিহাসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ, মার্কিন ভাবাদর্শ বিরোধী এবং দেশের মানুষকে বিভক্ত করে- এধরনের সব দর্শনীয় বস্তু অপসারণের আদেশ দেন তিনি। এই গুরুভার বহনের দায়িত্ব চাপিয়ে দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কাঁধে।
এছাড়া, ‘মিথ্যা ইতিহাস’ প্রচারে গত কয়েক বছরে যেসব পার্ক, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মারক অপসারণ বা পরিবর্তন করা হয়েছে, সেগুলো পুনরুদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘মার্কিন ইতিহাসে সত্য ও সুস্থতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এই আদেশে বিরোধী মতাদর্শ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বর্ণবৈষম্যের ভূমিকা নিয়ে উদ্ভূত আলোচনা ও পাঠচর্চাকে ‘পুনর্লিখন’ হিসেবে দেখছে এবং তা বাতিল করতে চাচ্ছে।
এছাড়া, আদেশনামায় দাবি করা হয়েছে, নারী ক্রীড়ায় অংশগ্রহণকারী পুরুষ ক্রীড়াবিদদের উদযাপন করার পরিকল্পনা করছে আমেরিকান উইমেন’স হিস্ট্রি মিউজিয়াম।
এই আদেশের বিষয়ে কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা হোয়াইট হাউজ বা স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়নি।
এই আদেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সেই চলমান প্রচেষ্টারই অংশ, যার মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও করপোরেট দুনিয়ায় বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা বাতিল করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিগত বৈষম্য ও লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে যে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে, তা দেশটির রক্ষণশীল রাজনীতিকদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্পের এই নতুন আদেশ সেই বিতর্ককে আরও উসকে দিতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
তথ্যসূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট