ইরানি তেল পরিবহনের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ইরানের তেল পরিবহন প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক ভারতীয় নাগরিক এবং দুইটি ভারত ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এক বিবৃতির মাধ্যমে এই ঘোষণা দিয়েছে দেশটির অর্থমন্ত্রণালয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস এ খবর জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুগিন্দর সিং ব্রার একাধিক শিপিং কোম্পানির মালিক। তার নৌবহরে প্রায় ৩০টি জাহাজ রয়েছে। এর অনেকগুলো গোপনে ইরানের তেল পরিবাহী ‘ছায়া বহরের’ অংশ হিসেবে কাজ করে।

আমিরাতভিত্তিক ব্যবসার পাশাপাশি ভারতে অবস্থিত গ্লোবাল ট্যাঙ্কারস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি শিপিং কোম্পানি এবং বি অ্যান্ড পি সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি পেট্রোকেমিক্যাল বিক্রয় প্রতিষ্ঠানেরও মালিক বা নিয়ন্ত্রণকারী হচ্ছেন জুগিন্দর।

অর্থমন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ (ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল অফিস বা ওএফএসি) তাদের ঘোষণায় আমিরাত ও ভারতের দুটি করে প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে জুগিন্দরের আংশিক বা সম্পূর্ণ মালিকানা রয়েছে। ইরানের জাতীয় তেল কোম্পানি ও ইরানি সামরিক বাহিনীর পক্ষে তেল পরিবহনের অভিযোগ আনা হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে।

ওএফএসির অভিযোগ, ইরাক, ইরান, আমিরাত এবং ওমান উপসাগরের জলসীমায় উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতি ব্যবহার করে জাহাজ থেকে জাহাজে পণ্য সরানোর মাধ্যমে ইরানি তেল পরিবহনে সহায়তা করে আসছে জুগিন্দরের জাহাজগুলো। পরবর্তীতে এই কার্গোগুলো অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, যারা বিভিন্ন দেশের পণ্যের সঙ্গে তেল মিশিয়ে নথিপত্র জাল করে তা আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেয়।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ইরান সরকার অসাধু শিপিং ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে আসছে। এদের মাধ্যমেই তেল বিক্রি করে তেহরান বিভিন্নরকম অস্থিতিশীল কাজে অর্থ জোগান দিয়ে থাকে।

এজন্যই, ইরানের তেল পরিবহন নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল খাত লক্ষ্য করে কিছুদিন আগে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন ট্রাম্প। তার আওতায় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ইরানকে বাগে আনতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে সর্বোচ্চ চাপ নীতি গ্রহণ করেন ট্রাম্প। সেটি বাস্তবায়নে এ নিয়ে মোট পঞ্চম দফা ইরানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলো ট্রাম্প প্রশাসন।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে, যুক্তরাষ্ট্র বা মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন যেকোনও স্থানে, নিষিদ্ধ ব্যক্তির সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত থাকবে।

এছাড়া, যে-সব প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, একক বা যৌথভাবে, ৫০ শতাংশ বা তার বেশি নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ব্যক্তির মালিকানাধীন, সেগুলোও অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।