তুরস্কে সরকারবিরোধী আন্দোলনে আটক ১৯০০, আন্তর্জাতিক সমালোচনা প্রত্যাখ্যান

ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেফতারকে ঘিরে চলমান বিক্ষোভে ইতোমধ্যেই মোট এক হাজার ৯০০ ব্যক্তিকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। আঙ্কারার এসব কর্মকাণ্ডে উদ্বিগ্ন হয়ে একাধিক বিদেশি রাষ্ট্র বিবৃতি দিয়েছে। তবে এসব বক্তব্যকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইস্তানবুলে আয়োজিত সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধিদের প্রশ্নের জবাবে বিচারমন্ত্রী ইলমাজ টাঙ্ক বলেছেন, আঙ্কারার ইউরোপীয় অংশীদারদের উচিত সাধারণ জ্ঞান ব্যবহার করে কথা বলা। ইমামোগলুকে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে।  

ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে আটদিন আগে বুধবার আন্দোলন শুরু হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া বলেছেন, ইতোমধ্যেই অন্তত এক হাজার ৮৭৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৬০ জনকে আদালতে তোলা হবে। এছাড়া, ৬৬২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনও যাচাই করে দেখা হচ্ছে এবং ৪৮৯ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হচ্ছেন এই ইমামোগলু। বিভিন্ন জরিপে প্রেসিডেন্টের চেয়ে তার জনপ্রিয়তা বেশি। সংকটের শুরু হয় দুর্নীতির মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে।

গত সপ্তাহে আকস্মিকভাবে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে চলতি সপ্তাহের রবিবার মামলা শেষ হওয়ার আগেই তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। এতে দেশব্যাপী তার সমর্থকরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে নামে।

প্রধান বিরোধীদল ইমামোগলুর রিপাবলিকান পিপলস পার্টিসহ (সিএইচপি) তুরস্কের অন্যান্য বিরোধীদল এবং ইউরোপীয় মিত্রদের অভিযোগ, আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে রাজনৈতিক উদ্দেশে ইমামোগলুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

অবশ্য বিচারবিভাগকে নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সরকার। তাদের দাবি, আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের কাজ পরিচালনা করে।

টাংক বলেছেন, আমরা কোনও রাজনীতিবিদকে কারারুদ্ধ করতে চাই না। যদি কারও বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকে, তবে তারা এমনিই বিচারের আওতায় আসবেন। ইমামোগলুর বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ ছিল। আলামত নষ্ট করার শঙ্কা থেকে আদালত তাকে কারারুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে যৌক্তিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, তুর্কি সরকার স্বাধীনতার ওপর নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ফ্রান্স। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বলেছেন, ইউরোপের নিরাপত্তা দায়িত্ব নিতে সক্ষম, আমরা এমন তুরস্ক দেখতে চাই। সেজন্য আমরা চাই, আঙ্কারা তার অঙ্গীকার অনুযায়ী গণতন্ত্রের পথে থাকবে।