গাজা পুনর্গঠনে মিসরের প্রস্তাবিত পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) একই বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে কায়রোর প্রস্তাবের প্রতি তার সমর্থন দেওয়া উচিত। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমিকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা বানানোর মার্কিন পরিকল্পনাকে চ্যালেঞ্জ করতে আরব লীগের আয়োজিত সম্মেলনে আব্বাস বলেছেন, পরিস্থিত অনুকূলে থাকলে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন দিতে সম্মত আছেন তিনি। তিনি দাবি করেন, ফিলিস্তিন শাসনের জন্য তার প্যালেস্টিনিয়ান অথোরিটিই একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ।
হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তনের পর গাজা বিষয়ে এক বিস্ফোরক পরিকল্পনার কথা প্রস্তাব করেন ট্রাম্প। তিনি গাজা থেকে সমস্ত ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করে স্থানটিকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা হিসেবে গড়ে তোলার এক আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংকট নিরসনে দীর্ঘদিনের দুই রাষ্ট্র সমাধান থেকে পুরোপুরি সরে আসার ইঙ্গিত দেন তিনি, যা ফিলিস্তিনসহ আরব দেশগুলোর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে।
সংঘাত বন্ধের পর গাজার শাসনভার কার হাতে যাবে- এই প্রশ্নের এখনও কোনও সদুত্তর মেলেনি। এদিকে, ফিলিস্তিনের ওপর বাইরের কোনও শক্তির চাপিয়ে দেওয়া সমাধান সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করে আসছে হামাস।
মিসরের পরিকল্পনাতেও এসব প্রশ্নের যথাযথ কোনও সমাধান দেখতে পায়নি রয়টার্স। গাজার পুনর্গঠনের অর্থ কীভাবে সংগ্রহ করা হবে, শাসনভার কে নেবে অথবা হামাসের মতো প্রভাবশালী এক সশস্ত্র গোষ্ঠীকে মাঠের বাইরে রেখেই কীভাবেই বা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে- এসব সংক্রান্ত বিস্তারিত কোনও আলোচনা সেখানে দেখা যায়নি।
মিসরীয় খসড়া অনুযায়ী, গাজা পরিচালনাকারী হামাসের বদলে সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব নেবে গভর্ন্যান্স অ্যাসিট্যান্স মিশন। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সহায়তা ও পুনর্গঠনের দায়িত্ব থাকবে তাদের হাতে।
খসড়ার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, হামাসের মতো প্রভাবশালী ও সশস্ত্র গোষ্ঠী গাজার স্থানীয় সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন প্রকল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে।
মিসরের পরিকল্পনার অন্তর্বর্তীকালীন শাসকগোষ্ঠী কীভাবে গঠন হবে, সে বিষয়েও বিস্তারিত বলা হয়নি। এতে কেবল উল্লেখ করা হয়েছে, গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞ এবং বাইরের বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় পুনর্গঠন কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবশ্য, ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে মিসর ও জর্ডানসহ অন্যান্য আরব দেশে পুনর্বাসনের পরামর্শকে সরাসরি প্রত্যাখান করা হয়েছে। তাদের দাবি, এতে তাদের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে।
আরব লীগের সম্মেলনে আব্বাস বলেছেন, পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফাতাহ আন্দোলন থেকে বরখাস্ত হওয়া সকল সদস্যের জন্য সাধারণ ক্ষমা জারি করা হবে।