৩ বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনে রাশিয়ার বৃহত্তম ড্রোন হামলা

ইউক্রেনে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যুদ্ধের তৃতীয় বছর পূর্ণ হতে যাওয়ার একদিন আগে এই হামলা চালানো হয় বলে রবিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এ খবর জানিয়েছে।

আকাশ সন্ত্রাস চালানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জেলেনস্কি বলেছেন, সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে ২৬৭টি ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় নগর ও গ্রামে ইরানি ড্রোন দিয়ে হামলা শুরুর পর এই প্রথম এত ব্যাপক পরিসরে ড্রোন হামলা চালানো হয়।

দেশটির বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ২৬৭টির মধ্যে ১৩৮টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। আর বৈদ্যুতিক অস্ত্র ব্যবহার করে সিগন্যালে বিঘ্ন ঘটানোর পর বাকি ১১৯টি ড্রোন রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

ইউক্রেনে হামলার জন্য গত এক সপ্তাহে রাশিয়া প্রায় এক হাজার ১৫০টি ড্রোন পাঠিয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি। এছাড়া, ক্রেমলিন এক হাজার ৪০০ এর বেশি গাইডেড এরিয়াল বোমা এবং বিভিন্ন ধরনের ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েও হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

এর আগে, শনিবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য আবারও আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, কেবল নিরাপত্তা নিশ্চয়তাই পারে সংখ্যাগরিষ্ঠকে ঐক্যবদ্ধ করতে। পুতিন যেন আর কাউকে ধোঁকা দিতে না পারেন এবং রাশিয়া যেন ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্য এমনকি আফ্রিকার জন্যও মৃত্যুর বার্তাবাহক হতে না পারে- ইউরোপ, আমেরিকাসহ আমাদের বৈশ্বিক সব মিত্রের এ বিষয়ে একটা বোঝাপড়ায় আসা দরকার।

তিনি আরও বলেছেন, যুদ্ধের তৃতীয় বছর পূর্ণ হওয়ার মুহূর্তে পুরো বিশ্বকে পাশে পাওয়া ইউক্রেনীয়দের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন বক্তব্য ও পরিকল্পনায় ইউক্রেন ইস্যুর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ইউরোপীয় মিত্ররা। আগের বছর জেলেনস্কিকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিক্রেতা বলা ট্রাম্প গত সপ্তাহে যুদ্ধ শুরুর জন্য ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টকেই দায়ী করেছেন। ওই একই বক্তব্যে জেলেনস্কিকে নির্বাচনহীন একনায়ক বলেও সমালোচনা করেছেন তিনি।

ট্রাম্পের বক্তব্যে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও অবস্থানের পরিবর্তনের আভাস পেয়ে অস্বস্তিতে আছেন ইউরোপীয় নেতারা। ইউক্রেনকে মাঠের বাইরে রেখে রাশিয়ার সঙ্গে একতরফাভাবে কোনও আলোচনায় না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে সামনে সপ্তাহে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।