মেলবোর্নে মুসলিম নারীদের ওপর হামলায় মুখ খুললেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী

মেলবোর্নের একটি শপিং সেন্টারে দুই মুসলিম নারীর ওপর হামলার অভিযোগের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে তার সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আলবানিজ বলেছেন, ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে হামলা করা নিন্দনীয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে হামলা করাকে আমি গুরুত্বের সঙ্গে নিই। এর জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ হওয়া উচিত। আমরা ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়েছি, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আমাদের বৈচিত্র্যময়তাকে উদযাপন করি এবং সব ধর্মের মানুষকে সম্মান করি।

আলবানিজ এই বক্তব্য এমন এক সময়ে দিলেন, যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার উসমানা খাজাসহ অস্ট্রেলিয়ার কিছু মুসলিম অভিযোগ করেছেন, ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সরকার পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

মঙ্গলবার খাজা বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ ও বিরোধীদলীয় নেতা পিটার ডাটন এই হামলার বিষয়ে কিছু বলবেন না এবং অন্য সব ইসলামবিদ্বেষী হামলার মতো এটিও ধামাচাপা দেওয়া হবে। তবে বুধবার তিনি আলবানিজ ও ডাটনকে ধন্যবাদ জানান, যারা এই হামলাকে অপমানজনক বলে অভিহিত করেছেন।

অভিযোগের শিকার এক নারী, ইলাফ আল-ইসাভি, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলাকারী তার মুখ ও বুকের ওপর আঘাত করার পর মাটিতে ফেলে দেন। তিনি বলেন, আমি আতঙ্কিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। যা ঘটেছে তা আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। এই দৃশ্য আমার মাথা থেকে যাচ্ছে না। আমি এখন বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে আটকে আছি।

মেলবোর্ন পুলিশ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৩১ বছর বয়সী এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ১৩ ফেব্রুয়ারির এই হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ভিক্টোরিয়া পুলিশের মুখপাত্র বলেন, পুলিশ বলছে হিজাব পরার কারণে এই নারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমাদের সমাজে বৈষম্যমূলক, বর্ণবাদী বা ঘৃণামূলক আচরণের কোনও স্থান নেই এবং এমন আচরণ সহ্য করা হবে না।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামবিদ্বেষী ও ইহুদিবিদ্বেষী ঘটনা বেড়ে গেছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে। এই ঘটনাগুলো নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বাড়ছে।