পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে লাহোরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে অজ্ঞাত অস্ত্রধারীদের হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বারখান জেলায় এই হামলা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রয়টার্সকে স্থানীয় এক জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা খুরশিদ আলম বলেছেন, প্রায় ৪০ জন অজ্ঞাত সশস্ত্র ব্যক্তি একাধিক বাস আটকে যাত্রীদের পরিচয়পত্র যাচাই শুরু করে। এরপর সাত ব্যক্তিকে জোর করে বাস থেকে নামিয়ে গুলি করা হত্যা করা হয়। নিহতদের সবাই কেন্দ্রীয় পাঞ্জাবের অধিবাসী ছিলেন।
আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ওই অঞ্চলে শাসন ক্ষমতা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর অধিক নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে আসছে বিদ্রোহীরা।
ওই অঞ্চলের সহকারী কমিশনার খাদিম হুসাইন বলেছেন, পাঞ্জাবের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দেরা ঘাজা খান থেকে বারখানগামী মহাসড়কে ওই হত্যা সংঘটিত হয়েছে।
হামলার দায় স্বীকার করে কোনও গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এখনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এছাড়া, হামলার কারণ সম্পর্কেও এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা।
রয়টার্সকে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলার পর ঘটনাস্থল ও এর আশেপাশের এলাকা অবরুদ্ধ করা হলেও অস্ত্রধারীরা পালিয়ে গেছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে, শুক্রবার এক বোমা হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। কয়লা শ্রমিকদের বহনকারী একটি গাড়ি লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।
গত আগস্টে, পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপক হামলায় কয়েক ডজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বেসামরিক অবকাঠামো ও নাগরিক এবং পুলিশ স্টেশন লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালানো হয়েছে।এছাড়া, অন্য এক ঘটনায়, সাধারণ মানুষের পরিচয়পত্র যাচাই করে রাস্তার ওপরেই গুলি করে ২৩ জনকে হত্যা করা হয়।
ওই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিল বেলুচ লিবারেশন আর্মি বা বিএলএ। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে বৃহত্তম হচ্ছে এই বিএলএ। বেলুচিস্তানে কর্মরত চীনা নাগরিকদের ওপরও হামলা চালিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
বেলুচিস্তানে অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে বেইজিংয়ের। ওই প্রদেশের গোয়াদারে তারা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চীনের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের জন্য চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরের আওতায় ৬৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে বেইজিং।
হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে বিবৃতি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, অন্যদের জানমালের ওপর হুমকি সৃষ্টি করলে তার জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।