লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী গ্রামে বাস্তুচ্যুত লেবানিজদের ঘরে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) এক ঘোষণায় জানানো হয়, রবিবারের মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও ইসরায়েলি বাহিনী ওই এলাকায় অবস্থান করবে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে দক্ষিণ লেবাননের বেশ কয়েকটি গ্রাম চিহ্নিত করা একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এলাকাবাসীদের নিজ গ্রামে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কেউ নির্ধারিত সীমারেখার দক্ষিণে অগ্রসর হলে, তিনি ঝুঁকির মুখে পড়বেন।
প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী, এই রেখা পূর্বে সীমান্তবর্তী শেবা থেকে পশ্চিমে মানসুরি পর্যন্ত বিস্তৃত, যা সীমান্ত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে।
সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী রবিবারের মধ্যে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল। চুক্তি অনুসারে, ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর সরে যাওয়ার পাশাপাশি ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর অস্ত্র ও সদস্যদের প্রত্যাহার এবং লেবাননের সেনা মোতায়েন নিশ্চিত করার কথা ছিল।
তবে শুক্রবার ইসরায়েল অভিযোগ করে বলেছে, লেবানন সরকার চুক্তির শর্ত সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই সময়সীমার পরও কিছুদিন অবস্থান করবে তারা। তবে তারা কতদিন থাকবে, তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে, মার্কিন-সমর্থিত লেবাননের সামরিক বাহিনী শনিবার এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে বলেছে, সেনা প্রত্যাহার নিয়ে গড়িমসি করছে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে গত বছর হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে লড়াইয়ের অবসান হয়। গাজা যুদ্ধের সমান্তরালে চলছিল এই সংঘাত। ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে লেবাননে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং হিজবুল্লাহর অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে।
দেশটির পার্লামেন্টে হিজবুল্লাহর সদস্য আলি ফায়াদ বলেছেন, সেনা প্রত্যাহারে বিলম্ব করে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল। এটি একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা লেবাননের জন্য নতুন হুমকি তৈরি করতে পারে।
লেবাননের সেনাবাহিনী শনিবার এক বিবৃতিতে সীমান্ত অঞ্চলে মাইন ও অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের উপস্থিতির কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের এখনই ফেরার বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।