সুদানের বেশিরভাগ সেনানিয়ন্ত্রিত এলাকায় ড্রোন হামলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা। আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালানোর পর এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
দেশটির বৃহত্তম মেরোওয়ে বাঁধে সোমবার ড্রোন হামলার ফলে সুদানের উত্তরাঞ্চল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি, একটি কারিগরি সমস্যার কারণে নীল নদ ও লোহিত সাগর নিকটবর্তী এলাকাতেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। দেশটির পূর্বাঞ্চলের আল-শুক পাওয়ার স্টেশনে শনিবার গভীর রাতে হামলার পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার এই সমস্যা গেডারেফ, কাসালা ও সেন্নার প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়ে বলে কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এই অঞ্চলগুলো মূলত সেনানিয়ন্ত্রিত এলাকা। আরএসএফের সঙ্গে প্রায় দুই বছর ধরে এসব স্থানে তাদের সংঘাত চলছে। পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা আরএসএফ নিয়ন্ত্রণ করে, যেখানে যুদ্ধের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেকাংশে বন্ধ।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে লাখ লাখ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ বসবাস করছে। মানবাধিকার সংস্থা ইমার্জেন্সি লইয়ার্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলার কারণে হাসপাতাল, স্কুল ও পানি সরবরাহ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেসামরিক মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
তারা আরও বলেছে, এই হামলাগুলো কেবল বেসামরিকদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাশাপাশি সহিংসতা বাড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
সুদানের যুদ্ধ ইতোমধ্যে এক কোটি লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। চলতি মাসে গ্লোবাল হাঙ্গার মনিটরের এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, মে মাস পর্যন্ত প্রায় দুই কোটি ৪৬ লাখ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হবে। এই সংখ্যাটি দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।
খার্তুমের বৃহত্তর এলাকাতে অবস্থিত ওমদুরমান শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিদ্যুতের অভাবে বেকারিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আর পান করার জন্য মানুষ নীল নদ থেকে পানি সংগ্রহে বাধ্য হচ্ছে।
মেরোওয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। তবে রয়টার্সের সূত্র জানিয়েছেন, এই কাজে এখনও তেমন অগ্রগতি হয়নি।