ফ‍্যাক্টচেক বাতিল: ফেসবুকের রাজনৈতিক কৌশল নাকি অবস্থানের পরিবর্তন

সরকার ও ঐতিহ্যবাহী সংবাদমাধ্যমগুলো মানুষের ওপর সেন্সরশিপ চাপিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ফেসবুকে ফ্যাক্টচেকিং বাতিল করে প্ল্যাটফর্মটিকে তাদের শিকড়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। তবে জাকারবার্গের এই পদক্ষেপ নিয়ে নানা মুনির নানা মত দেখা দিচ্ছে। কেউ একে দেখছেন রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে। আবার কারও মনে হচ্ছে, আসলেই মতাদর্শ পরিবর্তন করেছেন জাকারবার্গ। ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

ফেসবুকের বিরুদ্ধে মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকার অভিযোগ বরাবরই করে আসছেন হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আনুষ্ঠানিক অভিষেকের কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে ফ্যাক্ট চেকিং বন্ধ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে বলে একটি ভিডিও বার্তায় ঘোষণা দেন জাকারবার্গ। এই আকস্মিক ঘোষণা অনেককেই অবাক করেছে। তবে তিনি অতীতেও রাজনৈতিক প্রভাব ঠেকাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ক্যারোলিনা মিলানেসি বলেছেন, এটি রাজার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ। ট্রাম্পের বিষোদ্‌গার এড়াতে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

আরেক ধনকুবের ও জাকারবার্গের প্রতিদ্বন্দ্বী, টেসলা ও স্পেস এক্সের মালিক ইলন মাস্কের মতোই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করলেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা। জলবায়ু ইস্যুতে এতদিনের ডেমোক্র্যাট সমর্থক মাস্ক এবার ট্রাম্পের প্রচারণায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। অনেকের অভিমত, ট্রাম্পের কাছ থেকে এককভাবে সব সুবিধা বাগিয়ে নেবেন মাস্ক- এই আশঙ্কায় নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছেন জাকারবার্গ।

সেইন্ট জনসন ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক কেইট ক্লোনিক বলেছেন, এটি প্রযুক্তি খাতের ধনকুবেরদের এক ধরনের মৈত্রী, যেখানে তারা সেন্সরশিপের ধারণায় মদত দিচ্ছেন।

ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার অধ্যাপক অ্যান্ড্রু সেলাপাক বলেছেন, এটি সম্ভবত ধনকুবেরদের মধ্যে ঈর্ষার থেকে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। তবে ফ্যাক্টচেকিং বাতিলে কৌশলের চেয়ে জাকারবার্গের সত্যিকারের কোনও পরিবর্তন হয়েছে বলেই মনে করেন তিনি।  

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ অনেক বিষয়েই মাস্ক ও জাকারবার্গ দুজনই একে অন্যের চরম প্রতিদ্বন্দ্বী।