সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কামিশলিতে হাজার হাজার নারী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। দেশটির নতুন শাসক গোষ্ঠীর কাছে নারী অধিকারের প্রতি সম্মান করার দাবি নিয়ে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নারী অধিকারকর্মী সাওসান হুসেইন বলেছেন, নতুন শাসক গোষ্ঠীর কাছে আমরা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছি। নতুন দেশে নারীদেরকে অধিকার বঞ্চিত করা যাবে না। এছাড়া, কোবানি শহরে তুরস্কের হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
অনেক বিক্ষোভকারীকে উইমেনস প্রটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজে) সবুজ পতাকা ওড়াতে দেখা যায়। এটি সশস্ত্র গোষ্ঠ কুর্দিশ পিপল'স প্রটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) একটি অঙ্গসংগঠন। ওয়াইপিজিকে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে গণ্য করা তুরস্ক সংগঠনটিকে ভেঙ্গে ফেলার দাবি জানিয়ে আসছে।
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে কুর্দিশ গোষ্ঠীগুলো অনেকটা স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছিলো। মার্কিন সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) নেতৃত্ব দেওয়া গোষ্ঠী ওয়াইপিজে ওই অঞ্চলের একটি প্রভাবশালী শক্তি।
তবে, দুই স্পতাহ আগে আসাদ সরকারকে সরিয়ে দামেস্কের সিংহাসনে হায়াত তাহরির আল-শামস (এইচটিএস) আরোহণ করার পর দৃশ্যপট পালটে যায়। নতুন প্রশাসন আঙ্কারার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দেশটিতে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আসে।
দুই প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মধ্যে আদর্শগত দ্বন্দ্বও বিদ্যমান। কুর্দিশ গোষ্ঠীগুলোর সমাজতন্ত্র ও নারীবাদের প্রতি সমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে, আল কায়েদার সাবেক সহযোগী সংগঠন এইচটিএস রক্ষণশীল সুন্নি ইসলামি আদর্শ অনুসরণ করে।
ফলে, নতুন প্রশাসনের অধীনে সিরিয়া কট্টরপন্থি ইসলামি শাসনের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। সেটা বাস্তবে পরিণত হলে, সংখ্যালঘু ও নারীদের অধিকার সংকুচিত হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
এই আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে সিরিয়ার ক্রান্তিকালীন সরকারের মুখপাত্র ওবাইদা আরনোউট এর বক্তব্যে। তিনি গত সপ্তাহে বলেছিলেন, নারীদের জৈবিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রকৃতির কারণেই তারা নির্দিষ্ট কিছু সরকারি কাজের উপযুক্ত নন।
এর প্রতিবাদে সোমবার রয়টার্সকে কুর্দিশ প্রশাসনের এক কর্মকর্তা হেমরিন আলি বলেছেন, ওয়াইপিজেকে সমর্থন করুন। উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় সিরিয়ায় নারী অধিকার অর্জন ও রক্ষায় হ্যাঁ বলুন।