পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচনের ৬ আসনে জয়ী তৃণমূল, জামানত গেলো বাম-কংগ্রেসের

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। সবকটি আসনেই বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিজেপি। তবে এই নির্বাচনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের প্রার্থীরা সব কটি কেন্দ্রে জামানত হারিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলার মানুষ এই দুই দলকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

উপনির্বাচনের ফলাফলে আরও একটি নজিরবিহীন চিত্র উঠে এসেছে—বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের প্রার্থীরা অনেক কেন্দ্রে নোটার (নান অব দ্য অ্যাবোভ) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মাদারিহাটে নোটা পেয়েছে ২ হাজার ৮৫৬ ভোট, যেখানে আরএসপি ও কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৩ হাজার ৪১২ ও ৩ হাজার ২৩ ভোট।

একটি কেন্দ্রের কোনো প্রার্থীকেই পছন্দ না হলে ভোটাররা তা ব্যালট পেপার বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে জানাতে পারেন। এই বিশেষ বোতাম বা ঘরটির নাম  ‘নোটা’ বা ‘নান অব দ্য অ্যাবাভ’ – অর্থাৎ ওপরের প্রার্থীদের মধ্যে কেউই নন। 

তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা প্রতিটি আসনে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তালড্যাংড়ায় তৃণমূল প্রার্থী ফাল্গুনী সিংহবাবু জয়ী হয়েছেন ৩৪ হাজার ৮২ ভোটে। নৈহাটিতে সনৎ দে জয়ী হয়েছেন ৪৮ হাজার ৮৭৯ ভোটে। হাড়োয়া আসনে রবিউল ইসলাম ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৮৮ ভোটে জয়লাভ করেছেন। সুজয় হাজরা মেদিনীপুর আসনে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ১৯০ ভোট। ১ লাখ ৩০ হাজার ১৫৬ ভোট পেয়ে সিতাই আসন জিতেছেন সঙ্গীতা রায়।

কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের দুর্বল সংগঠন এই ফলাফলের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। সিতাইয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক মাত্র ৩ হাজার ৩১৯ ভোট পেয়েছে। আর নোটা পেয়েছে ১ হাজার ৩১৭ ভোট। মেদিনীপুরে ষষ্ঠ ও সপ্তম রাউন্ডে কংগ্রেস নোটার চেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল, পরে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে যায়। হাড়োয়া ও তালড্যাংড়াতেও একই চিত্র দেখা গেছে।

এই ফলাফল বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক প্রত্যাখ্যান হিসেবে দেখা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের একচ্ছত্র আধিপত্য ও বিজেপির দ্বিতীয় অবস্থান প্রমাণ করে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের অবস্থান দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে।