মণিপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১০ সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহী নিহত

ভারতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অস্ত্রধারীদের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, মণিপুরের জিরিবাম জেলায় মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্দেহভাজন কুকি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিক্রিয়ায় বেশকিছু এলাকায় গোষ্ঠীভিত্তিক সংগঠনগুলো শিক্ষা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।

এক পুলিশ কর্মকর্তা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সম্ভবত অটোরিকশায় এসেছিল। জিরিবামের বোরোবেকরা এলাকার পুলিশ স্টেশনটি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একাধিকবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।

সন্দেহভাজনরা জিরিবামের একটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেখানে দুই প্রবীণ ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সন্দেহভাজনরা জিরিবামের একটি পুলিশ স্টেশনে দুই দিক থেকে ব্যাপক হামলা চালালে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ স্টেশনের পাশে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের জন্য একটি ত্রাণ শিবির রয়েছে। সেটি অস্ত্রধারীদের হামলার লক্ষ্য হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ স্টেশনে আক্রমণের পর সন্দেহভাজনরা প্রায় ৪০০ মিটার দূরে জাকুরাডর কারং নামক একটি ছোট জনপদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে তারা বাড়িঘরে আগুন দিতে শুরু করে। এসময় তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয়।

এনডিটিভি জানিয়েছে, জিরিবামে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়েছে সিআরপিএফ। এ ঘটনার পর কুকি সম্প্রদায়ের সামাজিক সংগঠনগুলো তাদের আধিপত্য থাকা এলাকায় সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের 'গ্রাম স্বেচ্ছাসেবকদের' মৃত্যুর জন্য শোক পালন করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সংঘর্ষের পর বেশকিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রকেট চালিত গ্রেনেড (আরপিজি) ও একে সিরিজের অ্যাসল্ট রাইফেল ছিল।

উভয় পক্ষের দাবি, 'গ্রাম স্বেচ্ছাসেবকরা' একনলা লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক ব্যবহার করেছে। যদিও শত শত ফাঁস হওয়া ফুটেজ তাদের এই দাবিকে পুরো সমর্থন করে না।

গত সপ্তাহে নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়ায় জিরিবামে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্দেহভাজন মেইতেই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র সদস্যরা হামার সম্প্রদায়ের এক নারীকে হত্যা করে তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই নারীর স্বামী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল।

পরদিন কৃষিকাজের সময় মেইতেই সম্প্রদায়ের এক নারীকে সন্দেহভাজন কুকি সদস্যরা গুলি করে হত্যা করে।

মঙ্গলবার সকালে সন্দেহভাজন কুকি অস্ত্রধারীরা ইম্ফলের পাহাড়ি এলাকা থেকে গুলি চালায়। এতে এক কৃষক আহত হন। এসব হামলার কারণে ধান কাটার মৌসুমে কৃষকরা মাঠে আতঙ্কিত বোধ করছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সিআরপিএফ দেশের বৃহত্তম কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী। এটি ঝাড়খণ্ডসহ অন্যান্য রাজ্যে মাওবাদী বিরোধী অভিযানে সফলতা অর্জন করেছে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, বিহারের কামুর ও রোহতাস অঞ্চলে নকশালবাদ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।