বিবাদ চরমে, কলকাতায়  মমতা সরকারের মুখোমুখি জুনিয়র ডাক্তাররা

মমতা সরকারের পুজোর কার্নিভালের দিনই  মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) কলকাতায় দ্রোহের কার্নিভালের ডাক দেওয়া হয়েছে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদকারী চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে। ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সেই প্রতিবাদ কর্মসূচি না করার অনুরোধ জানান। তবে চিকিৎসকরা তাদের অবস্থানে অনড়। সেই দ্রোহের কার্নিভালের আগেই কলকাতার একাধিক জায়গায় জারি করা হল ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা। অশান্তির আশঙ্কায় ধর্মতলা সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় একদিনের জন্য এই ধারা জারি করা হয়েছে।

জয়েন্ট প্লাটফর্ম অব ডক্টর্স-এর ডাকে মঙ্গলবার বিকেলে রানি রাসমণি রোডে দ্রোহের কার্নিভালের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই মিছিল ঘিরে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই এই পদক্ষেপ পুলিশের। এই কর্মসূচির কোনও পুলিশি অনুমতি নেই বলেই লালবাজার সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ধর্মতলা সংলগ্ন কিছু এলাকায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করেছে কলকাতা পুলিশ।

যে সব জায়গায় এদিন ১৬৩ ধারা জারি থাকছে, সেগুলো হল- রানি রাসমণি রোড, ওয়াই চ্যানেল, নিউ রোড, মেয়ো রোড, আউটট্রাম রোড, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস, জে.এল.নেহরু রোড, কুইন্স ওয়ে, স্ট্র্যান্ড রোড। এই সব রাস্তার সংলগ্ন এলাকাগুলোতেও এই ধারা জারি থাকছে। অর্থাৎ এই সব এলাকায় জমায়েত করা যাবে না।

সোমবার থেকে দেখা যাচ্ছে, রানি রাসমণি রোডে একাধিক খালি বাস দাঁড়িয়ে আছে। অভিযোগ, রাস্তা অবরুদ্ধ করে দেওয়ার জন্যই বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রেখেছে পুলিশ।

একদিকে যখন রেড রোডে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, অন্যদিকে তখন রানি রাসমণি রোডে বড় বড় ব্যারিকেড এনে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে রাস্তার ধারে। সকাল থেকেই রাস্তার ধারে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।

এদিকে, দশ দফা দাবির জন্য লড়ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। দাবি পূরণের আগ পর্যন্ত চলবে লড়াই। এবার সেই বিষয় নিয়েই মুখ খুললেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি জানিয়েছেন, ডাক্তারদের দশ দফা দাবির মধ্যে সাত দফা মেনে নেওয়া হয়েছে। যদিও, মুখ্য সচিবের সেই বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

মনোজ পন্থ বলেছেন, ‘জুনিয়র চিকিৎসকদের ১০ দফা দাবি ছিল, তার মধ্যে সাত দফা দাবির কাজ ইতোমধ্যেই হয়েছে। সাত দফা দাবির মধ্যে কিছু কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সেগুলোও হয়ে যাবে। আমরা সেটা সিনিয়র চিকিৎসকদের জানিয়েছি। বাকি দাবিগুলো প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তাই এগুলোর কোনও টাইমলাইন দেওয়া যাচ্ছে না।’

মনোজ পন্থের এই বক্তব্য শোনার পর জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদারের দাবি, ‘এটা মিথ্যে কথা। ৯০ শতাংশ কাজ মোটেও হয়নি। সেই গ্রাউন্ড রিপোর্ট আমরা দিতে পারি। সাতটা দাবি যে মেনে নেওয়া হয়েছে বলছে, সেটা ভিত্তিহীন। হ্যাঁ, পাইলট প্রোজেক্ট চালানো হবে বলছে। আর বৈঠক সিনিয়রদের সঙ্গে হয়েছে, আমাদের সঙ্গে হয়নি। বাকি তিনটির জন্য টাইমলাইন দিক। এই আশ্বাস কেন দিচ্ছে না।’