অভ্যুত্থানবিরোধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে জান্তা সরকার, অধিকারকর্মীদের উদ্বেগ

সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী এক দম্পতির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এই দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এদিকে, ২৪ সেপ্টেম্বর আরও প্রাণদণ্ড কার্যকরের পরিকল্পনা রয়েছে শাসকগোষ্ঠীর। দেশটির অধিকার বিষয় সংগঠনের বরাতে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

নারী অধিকার বিষয়ক সংগঠন উইমেন্স পিস নেটওয়ার্ক সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় মাউং কাউং হিতেত ও তার স্ত্রী চ্যান মিয়ায়ে থুয়ের প্রাণদণ্ড কার্যকর করা হয়। কোনও সুষ্ঠু তদন্ত ও শুনানি ব্যতিরেকেই ওই দম্পতিকে এক বোমা হামলায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দণ্ডিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সংগঠনটি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা করে মিয়ানমার জান্তা। ১৯৮০ এর দশকের পর ২০২২ সালের জুলাইতে তারা প্রথম ৪ জনের প্রাণদণ্ড কার্যকর করে। মানবাধিকার বিরোধী পদক্ষেপের কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু হয়ে আছে জান্তা সরকার। গণতন্ত্রপন্থী ও দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠীরা একজোট হয়ে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুললে সংকট আরও ঘনীভূত হতে থাকে।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার গণতন্ত্রপন্থী ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অভিযুক্তরা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বন্দী আছেন। ইয়াঙ্গুনের ট্রেনে চার পুলিশ অফিসারকে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের মে মাসে তাদেরকে অভিযুক্ত করে রায় ঘোষণা করা হয়।

সংগঠনটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘এভাবে মানুষকে হত্যা করতে থাকলে জান্তা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। মিথ্যা অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আরও ১শ’ ২০ জনের বেশি বন্দিকে হত্যা করতেও তারা পিছপা হবে না।’

ইন্ডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেশন মেকানিজম ফর মিয়ানমার এর প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান বলেছেন, এসব গোপন শুনানিতে দেওয়া রায়ের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ। এ ধরণের কার্যক্রম মানবাধিকার বিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধের এক বা একাধিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দ্য অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস নামক অধিকার বিষয়ক সংগঠন জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা প্রায় ২০ হাজার ৯শ’ ৩৪ জনকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে ১শ’ ২৩ জনের বেশি মানুষকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।