ভারতের রাজনীতিতে হিন্দুত্ববাদের প্রভাব

পাঁচ রাজ্যের ভোটে ৮ জন সাধু ভোট প্রার্থী

ভারতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে হিন্দুত্ববাদের যে ঝড় বইছে তা ফের টের পাওয়া গেল আসন্ন ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে। শুধু বিজেপি নয়, প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসও এই প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। এখন পর্যন্ত আট জন সাধু ওই রাজ্যগুলোর বিধানসভা ভোটে লড়াইয়ে নেমেছেন। এরমধ্যে একজন আবার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলেও জানা গেছে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানের নির্বাচনী লড়াইয়ে হিন্দু সাধুদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলোও ওই সাধুদের প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে  এবং নির্বাচনের জন্য তাদের আসন বরাদ্দ করছে। 

রাজস্থানে কংগ্রেস ও বিজেপি দুই দলেরই সাধু প্রার্থী করেছে। সেখানে বিজেপি এখন পর্যন্ত মহন্ত বালকনাথ, ওট্রাম দেবাসী এবং মহন্ত প্রতাপ পুরীর মনোনয়ন ঘোষণা করেছে। বিপরীতে কংগ্রেস ইসলামী ধর্মীয় নেতা সালেহ মোহাম্মদকে মনোয়ান দিয়েছে। রাজ্যস্থানের গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস মহন্ত প্রতাপ পুরীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সালেহ মোহাম্মদকে প্রার্থী করেছিল। 

উত্তরপ্রদেশ থেকে সাধ্বী অনাদি সরস্বতী নির্বাচনী দৌড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই বিধানসভা কেন্দ্রটি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে অসংখ্য সাধু নিজ নিজ রাজ্যে বিজেপি এবং কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মর্চি বাবা নামে একজন সাধু। তিনি মধ্যপ্রদেশের বুধনি নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচনে লড়ছেন। এই আসন থেকেই বিজেপির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিকভাবে বুধনি বিজেপির একটি শক্ত ঘাঁটি। এখানে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজের নেতৃত্বে বিজেপি কখনও কোনও নির্বাচনে হারেনি।

একইভাবে, ‘সবকে মহারাজ’ নামে পরিচিত সুশীল সত্য মহারাজ রেওয়া বিধানসভা আসন থেকে লড়ছেন। একই আসন থেকে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও লড়াই করেছিলেন তিনি।  ছত্তিশগড়ে রামসুন্দর দাস রায়পুর বিধানসভা আসনের জন্য লড়াই করছেন।  ছত্তিশগড় সরকার তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছে। এর আগে ভূপেশ বাঘেলের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কংগ্রেস সরকারের অধীনে বিধানসভার সদস্য ছিলেন তিনি।

ভারতে অযোধ্যার আন্দোলনের পর, অনেক হিন্দু সাধু রাজনীতিতে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন উমা ভারতী, সতপাল মহারাজ, চিন্ময়ানন্দ, যোগী আদিত্যনাথ এবং সাক্ষী মহারাজ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন উমা ভারতী। সতপাল মহারাজ উত্তরাখন্ডের রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব রাখেন এবং বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন।