ব্যাননকে গ্রেফতারের নেপথ্যে ‘ডিপ স্টেট’ তত্ত্ব, দাবি ফক্স উপস্থাপকের

যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজের অনুষ্ঠান সঞ্চালক লো ডবস অভিযোগ করেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননকে গ্রেফতারের পেছনে ‘ডিপ স্টেট’ ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কাজ করেছে। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) নিজের অনুষ্ঠানেই এমন দাবি করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

স্টিভ ব্যানন

উগ্র রক্ষণশীল রাজনৈতিক সংবাদমাধ্যম ব্রেইটবার্ট নিউজ নেটওয়ার্কের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান-এর আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব ছেড়ে ট্রাম্প প্রশাসনের মুখ্য কৌশল প্রণেতা হয়েছিলেন স্টিভ ব্যানন। সমালোচকরা ব্যাননকে একজন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী ও ডানপন্থি বর্ণবিদ্বেষী বলে আখ্যায়িত করেন। তবে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতম ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। মধ্যপন্থী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং-এর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার পর তাকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন ট্রাম্প। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে তহবিল সংগ্রহে জালিয়াতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সকালে গ্রেফতার হন ব্যানন। মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, ‘উই বিল্ড দ্য ওয়াল’ প্রচারণার মাধ্যমে প্রায় আড়াই কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করে ব্যানন ও অপর তিন ব্যক্তি লাখ লাখ ডলার জালিয়াতি করেছেন। বিচার বিভাগের দাবি, ওই তহবিল থেকে প্রায় দশ লাখ ডলার নিজের ব্যক্তিগত ব্যয় নির্বাহের জন্য খরচ করেছেন ট্রাম্পের সাবেক এ উপদেষ্টা।

ফক্স টেলিভিশন চ্যানেলে ফক্স বিজনেস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লো ডবস। বৃহস্পতিবার রাতে প্রচারিত ওই অনুষ্ঠানে ডবস দাবি করেন, ব্যানন ডিপ স্টেট ষড়যন্ত্র তত্ত্বের শিকার।  তিনি বলেন, ‘আজ সকালে ব্যাননকে এফবিআই কিংবা ইউএস মার্শাল-এর কোনও সদস্য গ্রেফতার করেননি। ব্যানন যখন চীনা ধনকুবেরের মালিকানাধীন একটি বড় ইয়টে করে ঘুরতে যাচ্ছিলেন, তখনই তাকে গ্রেফতার করেছে ইউএস পোস্টাল সার্ভিসের পরিদর্শকরা।’

ডবস আরও বলেন, ‘হ্যাঁ আপনারা ঠিকই শুনেছেন। পোস্টাল সার্ভিসের এলিট পুলিশ ইউনিট এ কাজ করেছে। তাদেরকে ইউএস পোস্টাল ইন্সপেকশন সার্ভিস নামে ডাকা হয়ে থাকে। ব্যাননকে গ্রেফতারের এখতিয়ার তাদের আছে এবং তারা তাই করেছে। যেকোনোভাবেই হোক ডিপ স্টেটই ব্যাননকে গ্রেফতারের জন্য ইউএস পোস্টাল সার্ভিসের এজেন্টদের পাঠিয়েছে।’

মূলত স্টিভ ব্যানন ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করার সময় এবং পরে হোয়াইট হাউসে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে ডিপ স্টেট তত্ত্বের প্রচারণা চালিয়েছিলেন। এর মধ্য দিয়ে বোঝানো হয়ে থাকে যে, ট্রাম্পের এজেন্ডা বানচাল করতে সরকারি আমলা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এজেন্টদের একটি দল গোপনে কাজ করছে। অবশ্য, ট্রাম্পের উপদেষ্টার পদ ছাড়ার সময় এ তত্ত্ব নিয়ে স্বয়ং ব্যাননই সন্দেহ জানিয়েছিলেন।